নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে হার্দিক পান্ডিয়া আর দীনেশ কার্তিককে ধোনির আগে ব্যাট করতে পাঠানো হয়েছিল। তার আগেই পাঁচ রানে তিন উইকেট হারায় ভারত। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ২৪ রানে চার উইকেট হারানোর কারণে মাত্র ২৪০ রানের টার্গেটও তখন অসম্ভব বলে মনে হচ্ছিল।
ভিভিএস লক্ষ্মণ হতাশ গলায় বলছিলেন, ‘ধোনিকে পান্ডিয়া আর দীনেশ কার্তিকেরও আগে ব্যাট করতে পাঠানো উচিত ছিল। এটা ভুল স্ট্র্যাটেজি নেওয়া হলো’।
ধোনির কাছে কাজটা একেবারে অসম্ভব ছিল না। ২০১১র বিশ্বকাপের ফাইনালে ধোনি যুবরাজ সিংয়েরও আগে চার নম্বরে ব্যাট করেছিল। সেই বিশ্বকাপটা ভারতের ঘরেই এসেছিল।
২০১১র বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ধোনি যখন ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তার আগে বীরেন্দ্র সেহবাগ, শচীন টেন্ডুলকার আর বিরাট কোহলির মতো গুরুত্বপূর্ণ উইকেটগুলো হারিয়ে ফেলেছিল ভারত। সে ম্যাচে অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন ধোনির ঐ সিদ্ধান্ত দেখে। কিন্তু সেদিন ৭৯ বলে ৯১ রানের একটা অসাধারণ ইনিংস খেলেন ধোনি।
এ ঘটনায় ২০১৮ সালে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ধোনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ বোলারই চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএলে খেলতেন। ওদের বোলিং তাই আমার ভীষণ পরিচিত ছিল। তার ওপরে তখন মুরলিধরন বল করছিল। ওকে নেট প্র্যাকটিসে বহুবার খেলেছি। তাই ওর বল খেলতে কোনো অসুবিধাই হবে না বলে নিশ্চিত ছিলাম। এটাই আমার সেদিন আগে ব্যাট করতে নামার পিছনে সব থেকে বড়ো কারণ ছিল বলে জানান মহিন্দর সিং ধোনি।
সৌরভ গাঙ্গুলি অবশ্য মনে করেন যে বিষয়টা শুধু ধোনির আগে ব্যাটিং করা নয়। তিনি বলেন, ধোনি যদি আগে ব্যাট করতে নামত, তাহলে অন্যদিকে যে তরুণ ব্যাটসম্যানরা খেলছিল, তাদেরও নিজের খেলাটা খেলতে বলত এম এস। রিশভ প্যান্ট অনেকটা সেট হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো একজন ব্যাটসম্যানের দরকার ছিল। ধোনি সঙ্গে থাকলে যেরকম শর্ট নিয়ে আউট হন রিশভ, তিনি সেই ধরনের শর্ট খেলতে বারণ করতেন নিসন্দেহে। ইংল্যান্ডের ম্যাচেও রিশভকে গাইড করেছিল ধোনিই।
এমনকি শচীন টেন্ডুলকারও মনে করেন যে ধোনিকে সাত নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে বড়ো ভুল করেছেন বিরাট কোহলি। এরকম একটা সময়ে একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের দরকার ছিল। রিশভ প্যান্টের সঙ্গে ক্রিজে থাকলে ওকে ঐভাবে ব্যাটিং করতে কিছুতেই দিত না ধোনি। জাদেজার সঙ্গে অন্যদিকে ধোনি ছিল। দুজনের মধ্যে মাঝে মাঝেই কথা হচ্ছিল। এম এসের পরামর্শ মতোই ওরা দুজনে এগিয়ে নিয়েছিল অনেকটা। ধোনিকে সাত নম্বরে পাঠানো একেবারেই অনুচিত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ভিভিএস লক্ষ্মণ মনে করেন যে সবসময়ে রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলির ওপরে ভরসা করে থাকা উচিত নয়। সেমিফাইনালে ভারতের হারের পর সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রাক্তন ক্রিকেটাররা এখন মূলত ঐ একটা ভুল সিদ্ধান্তকেই দায়ী করছেন।-বিবিসি