বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সন্ধ্যা নদীর তীরবর্তী অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। প্রথমদিন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় দুই প্রভাবশালীকে আটক করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল দাস গতকাল বুধবার দুপুরে এসআই জসীম উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সন্ধ্যা নদীর পয়সারহাট এলাকায় নদীর পূর্বপাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তিনি চিহ্নিত অবৈধ দখলদার স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী বখতিয়ার এন্টারপ্রাইজের মালিক বাদশা বখতিয়ারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। এর আগে ওই অবৈধ স্থাপনার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস, আওয়ামীলীগ নেতা আবুল বাশার হাওলাদার বাদশা, যুবলীগ সাবেক যুগ্ন সম্পাদক ফিরোজ শিকদারসহ স্থানীয় লোকজন ও অবৈধ দখলদারেরা।
আদালতের বিচারক এসময় নদীর পশ্চিমপাড়ে বাঁশ দিয়ে কচুরীপানা আটকে রাখার জন্য স্থানীয় সামাজিক লোকজনকে ভর্ৎসনা করেন। তিনি তার পর্যবেক্ষণে বলেন, দখলদাররা সুকৌশলে নদীর মধ্যে বাঁশের বেড়া দিয়ে কচুরীপানা আটকে রেখে পানির ¯্রােত বাঁধাগ্রস্থ করে নদীর তীর ভরাট করে তা দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আর এ কারণেই এখন পয়সারহাটগামী লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়তে পারছে না। বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাসকে কচুরীপানা অপসারণের দায়িত্ব প্রদান করেন আদালত। আদালতের অভিযানে নদী ভরাট করায় যুবলীগ নেতা স্থানীয় প্রভাবশালী দখলদার পয়সারহাট গ্রামের মৃত মালেক খানের ছলে জেবারুল খান ও আজাহার তালুকদারের ছেলে জুয়েল তালুকদারকে আটক করেন ভ্রাম্যমান আদালত। পরে আটককৃতদের ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালতের বিচারক বিপুল চন্দ্র দাস। দন্ডপ্রাপ্তরা নদী ভরাট করে বরিশালের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমখান এন্টারপ্রাইজকে জায়গা ভাড়া দিয়েছিল। আটককৃতরা আদালতের কাছে আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে ভরাটকৃত নদীর জায়গায় রাখা বালু ও পাথর সরিয়ে নিজ খরচে মাটি কেটে পুনরায় আগের অবস্থানে নদীর ¯্রােত প্রবাহ ফিরিয়ে দেয়ার শর্তে মুচলেকা প্রদান করে। এর ব্যাত্যয় ঘটলে তারা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা মেনে নিতে বাধ্য হবেন। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করে দন্ডপ্রাপ্তরা ছাড়া পায়। অবৈধ নদী দখল উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস নদী উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল দাস জানান, উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে মাত্র। নদী অবৈধ দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও জানান, শুধু পয়সারহাট এলাকাই নয়; উপজেলার সকল জায়গার নদী উদ্ধারে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।