ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া দেবগ্রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় সহকারি ইংরেজি শিক্ষক শামসুল ইসলাম (পলাশ) কে গ্রেফতার করেছে আখাউড়া থানা পুলিশ।
এর আগে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দ্বি-তলা ভবনের কার্যলয়ে ৩ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকার উত্তেজিত বিক্ষোব্দ জনতা। এ ঘটনার খবর পেয়ে আ্খাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আখাউড়া থানার ওসি, স্থানীয় কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া পৌরশহরের দেবগ্রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার স্কুলের সপ্তম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র ক্লাস নেয় সহকারি শিক্ষক শামসুল ইসলাম পলাশ। ওই শিক্ষক ক্লাসে একই বেঞ্চে বসা দুই ছাত্রীকে জোরপূর্বক শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালান। এ সময় শিক্ষার্থী চিৎকার করার ভয় দেখালে ওই শিক্ষক দ্রুত কক্ষ ছেড়ে চলে যান। পরে ওই শিক্ষার্থীরা বাড়ি গিয়ে ঘটনাটি পরিবারকে জানায়। পরক্ষণে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে উত্তেজিত লোকজন বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মিছিল স্লোগান দিতে থাকে।
এসময় অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল ইসলাম পলাশকে বিদ্যালয়ের দ্বি-তলা ভবনে প্রধান শিক্ষকের কার্যলয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত এলাকাবাসী। এসময় বিক্ষোব্দ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মাহফুজুর রহমানের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে পদত্যাগের দাবি করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা, আখাউড়া থানার ওসি রসুল আহম্মদ নিজামী, স্থানীয় কাউন্সিলর বাবুল সরদার, মোগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষকের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষক শামসুল ইসলাম (পলাশ) কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় আখাউড়া থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, শিক্ষক শামসুল ইসলাম পলাশ ক্লাসে বিভিন্ন অশ্লীল ও আপত্তিকর কথাবার্তা বলে এবং ছাত্রীদের গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করে। ইতোপূর্বে স্কুল কমিটি এমন অভিযোগ পেয়ে একাধিকবার সতর্ক করে নোটিশ দেন তাকে। কিন্তু তারপরও তিনি এমন কাজ থেকে বিরত হননি। এছাড়া পূর্বেও স্কুলছাত্রী শ্লীলতাহানির ঘটনায় জেল হাজতবাস করেছেন তিনি।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনা বলেন, এ ধরণের ঘটনা ক্ষমার যোগ্য নয়। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে আইনের আওতায় নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আখাউড়া থানার ওসি রসুল আহম্মদ নিজামী বলেন, শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষক শামসুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।