মৎস্য চাষের আড়ালে মাছ চুরি
সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ
পাবনার সাঁথিয়ায় মৎস্য চাষীদের পুকুর থেকে কোটি টাকার মাছ চুরি করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে। স্থানীয় মসজিদ ঘরে বসে শালিস বৈঠক। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের রাঙামাটি গ্রামে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, পাবনা জেলার মৎস্য উৎপাদনে অন্যতম প্রধান উপজেলা সাঁথিয়া। এ উপজেলার বিভিন্ন প্রজাতি মাছ সারা জেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলার চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে। উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নে রয়েছে মৎস্য চাষীদের হাজার হাজার পুকুর। যেখানে নিজেরা বছরের পর বছর মাছ চাষ করছে। এ ইউনিয়নের মানুষের অন্যতম জীবিকা মাছ চাষ। এ মাছ চাষকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বড় ধরণের মাছ চুরি চত্র। তারা দীর্ঘ দিন ধরে অন্যর পুকুর থেকে মাছ চুরি করে থাকেন। এতে লাভজনক ব্যবসা থেকে লোকসানে পড়তে থাকে মাছ চাষীরা। মাছ চুরি ঠেকাতে পাহারা দিত থাকেন মৎস্য চাষীরা। এক পর্যায়ে গত ২৭ অক্টোবর রাত দুইটার দিকে জৈনক মাছের গাড়ী চালক নজরুল মাছ নিতে গেলে পাহারায় থাকা হাসমত আলীর নিকট ধরা পড়ে। পরে গাড়ী চালক মাছ চুরি চক্রের রানা ও রবিউলসহ সবার নাম জানিয়ে দেন। ঘটনা ফাঁস হলে রওশন মাস্টারের ছেলে হাসমত আলী প্রধানদের নিকট বিচার চান। নন্দনপুরের গ্রাম্য প্রধান আলী মুর্তজার সভাপতিত্বে রাঙামাটি মসজিদ ঘরে গত ৫ নভেম্বর বসে শালিস বৈঠক। শালিসে শাহীন হোসেন, আঃ আওয়াল, লিটন হোসেনসহ স্থানীয় প্রধানগন ও মাছ চাষীরা উপস্থিত ছিলেন। শালিসে রাঙামাটি গ্রামের হাজী আঃ মালেকের ছেলে রানা আলী ও তার ভগ্নীপতি রবিউল ইসলাম নিজের পুকুরে মাচ চাষের আড়ালে অন্যর পুকুর থেকে মাছ চুরির কথা স্বীকার করে। তারা জাল দিয়ে মাছ চুরিতে নিজেদের জাল ও নির্ধারিত শ্রমিক, গাড়ী ব্যবহার করত। শালিসের দিন ৬২০০০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করে বলেও জানান। প্রধানরা রানাকে ৬০০০০ ও সহযোগী ইসলামের ছেলে সাকিব, নান্নুর ছেলে সাকিব ও নাছিমের ৫০০০ করে জরিমানা করেন।
রওশন মাস্টারের ছেলে হাসমত বলেন তার তিন পুকুরে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ চুরি হয়েছে। একই গ্রামের নজরুলের ছেলে হুমায়নের ১০/১২ লাখ, আঃ রাজ্জাকের ছেলে সুরুজের ৭/৮ লাখ, আঃ মজিদের ছেলে তুহিনের ৫/৭ লাখ, আসাদুজ্জামানসহ আরো অনেকে জানান তাদের কোটি টাকার মাছ চুরি করেছে এ চক্র। তারা ক্ষতি পুরনসহ বিচার চান। হাসমত জানান, মাছ চাষ করে আমার সংসার ভালো চলছিল। হঠাৎ ২০২১ সাল থেকে পুকুরে ছেড়ে দেয়া মাছের সাথে বিক্রয়ের সময় মাছের মিল হচ্ছিল না। চোরেরা গভীর রাতে নিজেদের পুকুরে মাছ ধরতে এসে আমাদের পুকুরে জাল দিযে মাছ ধরতো।
গ্রাম্য প্রধান ও রাঙামাটি গ্রামের মসজিদের ইমাম আব্দুল আওয়ার জানান, শালিসে চোরেরা মাছ চুরির কথা স্বীকার করেন। তাদের ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে বাদী পক্ষ এ বিচারে সন্তেষ্ট না হওয়া পরবর্তিতে শালিস বসার কথা রয়েছে।
শালিসী বৈঠাকের সভপতি আলী মুর্তজা জানান, স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষীর ভিত্তিতে চোর চক্রের জরিমানা করা হয়। চোরের প্রধান রানাও চুরির কথা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে রানা ও রবিউলের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে রানার বড় ভাই নুর মোহাম্মদ ফোন ধরে জানান, তারা কেউ এলাকায় নাই। শালিসী বৈঠাকের পর থেকে দুই জনই পলাতক রয়েছেন।