পর্দায় আসবে ‘বেগম রোকেয়া’, ফিরছেন কি শাবানা

প্রায় ২৯ বছর আগে ‘বেগম রোকেয়া’ শিরোনামের একটি সিনেমার শুটিং শুরু করেন গুণী অভিনেত্রী শাবানা। সে সময় তিনি এ সিনেমার একদিন শুটিং করেন বলে জানান। নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জীবনী নিয়ে ‘বেগম রোকেয়া’ সিনেমাটি নির্মাণ শুরু করেন সুভাস দত্ত।

এদিকে শাবানা অভিনয় ছেড়েছেন ২৪ বছর পার হচ্ছে। অন্যদিকে সুভাষ দত্তের মৃত্যুর এক যুগ পূর্ণ হবে ১৬ নভেম্বর। ‘বেগম রোকেয়া’ ছবিটির কথাও ভুলে গেছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সবাই। এর মধ্যে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) শাবানার স্বামী প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২৯ বছর আগে বন্ধ হওয়া ‘বেগম রোকেয়া’ চলচ্চিত্রটি বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। গত কয়েক দিনে এ নিয়ে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথাও বলেছেন।

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে এখন স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে থাকেন শাবানা। এর মধ্যে কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। তখন ‘বেগম রোকেয়া’ ছবির প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, চরিত্রটিতে তার অভিনয় করার খুব ইচ্ছা ছিল। আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘এটা আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নও বলা যেতে পারে। কিন্তু তা আর হলো কই। বেগম রোকেয়া চরিত্রটি না করার আক্ষেপটা থেকেই যাবে। আমি মনে করি, এখন সেই পরিচালকও নেই। আমার বয়সও কাভার করবে না। শুধু শুধু স্বপ্ন দেখলেও তো হবে না।’

শাবানার প্রযোজক স্বামীও জানালেন, শাবানা এখন আর বেগম রোকেয়া চরিত্রে অভিনয়ের পর্যায়ে নেই। তা ছাড়া তিনি অভিনয়ে ফিরবেনও না। তাই চরিত্রটি নিয়ে কয়েকজনের কথা মনে মনে ভেবেছেন। এ মাসের মাঝামাঝি তিনি দেশে ফিরবেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন, কে হতে পারেন বেগম রোকেয়া এবং কে হতে পারেন ছবিটির পরিচালকসহ অন্য সব বিষয়। কী কারণে হঠাৎ ‘বেগম রোকেয়া’ ছবিটি নিয়ে ওয়াহিদ সাদিক বললেন, ‘ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর রংপুর ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এখন অনেক বেশি আলোচিত। বর্তমান বাস্তবতায় বেগম রোকেয়া নিয়ে ছবি নির্মাণও অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। আপাতত এটুকুই বলতে চাই, বাকিটা সবকিছু চূড়ান্ত হলেই জানাতে পারব।’

সুভাষ দত্তের বড় ছেলের স্ত্রী শ্রাবণী দত্ত জয়া ‘বেগম রোকেয়া’ ছবিটি আবার নির্মাণের উদ্যোগের কথা শুনে খুশি হয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ওয়াহিদ সাদিকের প্রতি। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘আমার শ্বশুর মারা যাওয়ার আগেও কয়েক বছর ধরে এই ছবিটির কথাই শুধু বলতেন। একটা কথা তো প্রায়ই বলতেন, বেগম রোকেয়াকে নিয়ে ছবিটি বানাতে পারলে শান্তি পেতাম। এটা আমার জীবনের শেষ ছবি হতো, শাবানারও শেষ ছবি হিসেবে থাকত। আফসোস, তা আর হলো কই।’

কথা প্রসঙ্গে শ্রাবণী দত্ত বলেন, বেগম রোকেয়া ছবির জন্য অনেক কষ্ট করেছিলেন সুভাষ দত্ত। ‘তিনি অনেকবার রংপুর গিয়েছিলেন। ছোটবেলার বেগম রোকেয়া চরিত্রটি ঠিক করেছিলেন, যাকে চরিত্রের উপযোগী করে গড়ে তুলেছিলেন। সেই চরিত্রটি আমার বাসার কাজে সহযোগিতা করত। কত কিছু আজ মনে পড়ছে। ছবিটি বানানো গেলে আমার শ্বশুরের আত্মা শান্তি পাবে। আমি ওয়াহিদ সাদিক সাহেবকে বিষয়টি নিয়ে ভাবার জন্য স্যালুট জানাই’ বলেন শ্রাবণী।

সবশেষে শ্রাবণী দত্তও জানালেন, ‘আমাদের দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ‘বেগম রোকেয়া’কে নিয়ে একটা সঠিক সিনেমা দরকার। নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এ রকম একটি চরিত্র সিনেমার পর্দায় খুবই জরুরি।’