মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার : কমলগঞ্জে আলোচিত ৬ বছরের শিশু হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী দীর্ঘ ৩১ মাসেও সনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। সেই ঘটনাটি সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করে। আলোচিত এ মৃত্যুর ঘটনাটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও মৌলভীবাজার আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত শুরু করলেও কোন ক্লু উৎঘাটন অথবা জড়িত কেউ দীর্ঘ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই এবং তদন্তের বিষয়ে এ পর্যন্ত তাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। আদালত থেকে তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বার বার সময়ের আবেদন করছেন। অগ্রগতি না থাকায় বিচার পাওয়া না পাওয়ার প্রশ্নেই সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এ নির্মম হত্যায় জড়িতদের নাম জানতে ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে অসহায় বাবা-মা প্রতি ধার্য তারিখে আদালতের বারান্দায় বসে অপেক্ষা করেন। জানা গেছে- বিগত ৯ মার্চ-২০২২ইং, কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলিটি গ্রামের ফরিদ মিয়ার শিশু কন্যা ফাতেমা জান্নাত মৌ (৬) এর ক্ষতবিক্ষত ও গলাকাটা লাশ ঘরের পেছনে একটি নর্দমাযুক্ত স্থান থেকে উদ্ধার করে শমশেরনগর ফাঁড়ি পুলিশ। এ সময় তার শ্বাষনালী কাটা, খাদ্যনালী বের হওয়া ও ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ, র্যাব, পিবিআই, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছায়া তদন্তসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন। এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা মোছা: রুবি বেগম@ রেলী বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৭, তারিখ : ১০/০৩/২০২২ইং) দায়ের করেন। সর্বশেষ চাঞ্চ্যলকর ভাবে শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি মৌলভীবাজার পিবিআই তদন্ত শুরু করে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে নিহত শিশু মৌ-এর শ্বাসনালী, খাদ্যনালীসহ একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মামলার বাদীসহ পরিবারের লোকজন এ নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িতদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসি দাবী করেন। এ ব্যপারে জানতে চাইলে মা মোছা: রুবি বেগম@ রেলী ও বাবা ফরিদ মিয়া জানান- ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ফাতেমা জান্নাত মৌ সবার ছোট। সে কেছুলুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত কেছুলিটি বায়তুস সুন্নাহ জামে মসজিদ কেন্দ্রের কোরআন শিক্ষা স্তরের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। গত কয়েক বছরে একই গ্রামের আবেদুর রহমান আবেদসহ একাধিক প্রতিবেশীর সঙ্গে তাদের কয়েকবার ঝগড়া হয়েছে। পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সন্দেহজনক কয়েক জনের নাম দিয়েছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের জিঙ্গাসাবাদ করতে বিলম্ব করার কারণে কেউ কেউ দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। সন্দেহজনক কয়েকজন হুমকি প্রদান করার ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রী (নং-৬৬৭/২২, তারিখ ঃ ১৪/০৭/২২) করি। কিন্তু সেই সাধারণ ডায়রী আলোর মুখ দেখেনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী এসআই (নি:) শাহ মোকাদ্দির হুসেন বলেন- এ বিষয়ে কোন এখন পর্যন্ত ক্লু উৎঘাটন করা সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞ আদালতে একাধিক সময়ের আবেদন এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন- বাদীর দেয়া সন্দেহমূলক নামের তালিকা যাচাই-বাচাই করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।