ইকবাল কবীর রনজু, চাটমোহর, পাবনা.
শিকারীর ফাঁদে আটক হওয়া দুই বস্তা বক ডানা ঝাঁপটে উড়ে গেল মুক্ত আকাশে। মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা বকগুলো নিমিষে উড়ে গেল বিলের ধান ক্ষেতের দিকে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল নয়টা’র দিকে পাবনার চাটমোহরের ধানকুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সকাল তখন নয়টা। চাটমোহরের ধানকুনিয়া গ্রমের নিকটে চাটমোহর-ছাইকোলা সড়কের উপর দেখা মেলে দুজন বক শিকারীর। রাস্তার পাশে দাড় করানো তাদের ভ্যান গাড়িতে বক ধরার সরঞ্জামাদী। দুটি মুখ বাধা পাটের বস্তার ভিতরে নড়া চড়া করছে কিছু প্রাণী। দেখেই অনুমান করা যায় ভেতরে বক রয়েছে।
পেশাদার এ দুই শিকারী হলেন চাটমোহরের ছাইকোলা (পশ্চিমপাড়া) গ্রামের ওয়াহেদ আলী এবং নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা গ্রামের অসিম। তারা জানান, গত কয়েক দিন যাবত চাটমোহরের বিভিন্ন বিলে ফাঁদ পেতে বক ধরছিলেন তারা। মঙ্গলবার ভোড়ে বক ধরতে আসেন চাটমোহরের বোয়াইলমারী বিলে। ফাঁদ পেতে ভোড় থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত ধরে ফেলেন ৪০ টি বক। ক্রেতা পেলে কিছু বক বিক্রি করেন, কিছু বক খান। প্রতিটি বক একশ টাকা বা তার কিছু কম বেশি দামে বিক্রি করেন তারা। বকের মাংস খুব সুস্বাদু বলেও জানান।
বক ধরার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে এ প্রতিবেদক তাদের বুঝালে তারা আর বক ধরবেন না বলে জানান। এক পর্যায়ে তারা তাদের ধরা ৪০ টি বক উড়িয়ে দেন মুক্ত আকাশে। মৃত্যুর হাত থেকে বেচে যায় ৪০টি বক।
উল্লেখ্য, চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহরের বিলগুলোতে প্রচুর পরিমানে বক ও অন্যান্য পাখির দেখা মিলছে। এ সুযোগে আইন অমান্য করে অসাধু শিকারীরা বিভিন্ন বিল থেকে প্রায়শই ফাঁদ পেতে বকসহ অন্যান্য পাখি ধরে বিক্রি করছে।
এ ব্যাপারে চাটমোহরে কর্মরত অতিরিক্ত উপজেলা বন কর্মকর্তা এজাহিদ হোসেন জানান, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে বন্য পশু পাখি ধরা, আটকে রাখা আইনত অপরাধ। আমরা এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। উপজেলা পরিষদের সভায়ও এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। কেউ বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন লংঘন করলে, বন্য প্রাণী আটক করলে বা বিক্রি করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পাশাপাশি কেউ বন্য পশু পাখি শিকার, আটক, ক্রয়, বিক্রয় করলে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করতে সচেতন মহলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। বক বা খাবারযোগ্য অন্যান্য বন্য পাখি বা প্রাণী শিকারীদের নিকট থেকে না কিনতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।