পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী লেখক ঝুম্পা লাহিড়ী সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির একটি জাদুঘরের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখক ২০২৪ সালের ইসামু নোগুচি পুরস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানান। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের এ জাদুঘরটি তার কর্মীদের ‘কেফিয়েহ’ পরার কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল।
প্রসঙ্গত, কেফিয়েহ হলো একটি কালো-সাদা চেক স্কার্ফ, যা ফিলিস্তিনি সংহতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
সম্প্রতি ঝুম্পা লাহিড়ীকে ইসামু নোগুচি জাদুঘরের মর্যাদাপূর্ণ ওই পুরস্কার দেওয়ার কথা ছিল। যা জাপানি-আমেরিকান ভাস্কর ইসামু নোগুচির সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর প্রতীক হিসেবে দেওয়া হয়।
তবে বুধবার জাদুঘর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ঝুম্পা লাহিড়ী আমাদের আপডেটেড পোশাক নীতির প্রতিক্রিয়ায় ২০২৪ সালের ইসামু নোগুচি পুরস্কার গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা তার মতামতকে সম্মান জানাই এবং বুঝতে পারি যে, এই নীতি সবার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্য নাও হতে পারে’।
এর আগে, গত আগস্টে জাদুঘরটি তিনজন কর্মীকে বরখাস্ত করে এবং ঘোষণা দেয় যে, তারা অফিস সময়ে কোনো রাজনৈতিক প্রতীক বা বার্তা বহনকারী পোশাক পরতে পারবে না।
এ ক্ষেত্রে লাহিড়ীর এই নৈতিক অবস্থানের জন্য পাঠক এবং ফিলিস্তিনপন্থি কর্মীরা তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। অনেকেই তার এমন সাহসী পদক্ষেপকে ‘নৈতিক’ এবং ‘নৈতিকভাবে সঠিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে লাহিড়ীর এমন কাজের প্রশংসা করে অনেকেই তার বইগুলোকে আরও প্রচার করছেন।
কেউ কেউ আবার বিষয়টিকে এভাবে বলেছেন, ‘ইসামু নোগুচি যদি বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি কেফিয়েহ পরিধানের পক্ষে দাঁড়াতেন এবং জাদুঘরের এ নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেন’।
লন্ডনে জন্ম নেওয়া ঝুম্পা লাহিড়ী ভারতীয় অভিবাসী দম্পতির মেয়ে এবং মাত্র তিন বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। তার প্রথম গল্প সংকলন ‘ইন্টারপ্রেটার অফ ম্যালাডিস’ এর জন্য তিনি ২০০০ সালে পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেন। এরপর থেকে তিনি ইংরেজি ও ইতালীয় ভাষায় বেশ কিছু বই প্রকাশ করেছেন এবং বর্তমানে তিনি কলম্বিয়ার বার্নার্ড কলেজের সৃজনশীল লেখা প্রোগ্রামের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্প্রতি বার্নার্ড কলেজও বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছিল, যখন তারা ইনস্টাগ্রাম থেকে একটি পোস্ট মুছে দেয়। যেখানে একজন শিক্ষার্থী আরব লিট কোয়ার্টারলি ম্যাগাজিনের একটি সংখ্যার প্রচ্ছদ শো করেছিলেন, যাতে ফিলিস্তিনের মানচিত্রের ওপর ফুল ফুটে থাকার ছবি দেখানো হয়েছিল।
কেফিয়েহ ফিলিস্তিনের স্বাধিকার এবং গাজার জনগণের প্রতি সংহতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। বর্তমানে অনেক প্রতিবাদকারী এটি পরিধান করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবি জানায় এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সূত্র: মিডল ইস্ট আই