কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির জোমো কেনিয়াত্তা বিমানবন্দর পরিচালনার দায়িত্ব ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানিকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল দেশটির সরকার। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় বাদ সেধেছেন কেনিয়ার হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত সরকারের এই সিদ্ধান্তের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার কেনিয়ার হাইকোর্ট এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। উল্লেখ্য, জোমো কেনিয়াত্তা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট কেনিয়ার সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর। আর এই বিমানবন্দর পরিচালনার কাজ আদানিকে না দেওয়ার ফলে গোষ্ঠীটি বিদেশের মাটিতে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও একটি বড় ধাক্কা খেল।
কেনিয়ার সরকার ৩০ বছরের জন্য আদানি গ্রুপকে জোমো কেনিয়াত্তা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট পরিচালনার ইজারা দিতে যাচ্ছিল। তবে কেনিয়ার অধিকার গোষ্ঠী দ্য ল সোসাইটি অব কেনিয়া এবং কেনিয়া হিউম্যান রাইটস হাইকোর্টে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পিটিশন করে। তারা যুক্তি দেখায়, বিমানবন্দর পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আনুমানিক ১৮৫ কোটি ডলার তহবিল বহু দশকের ইজারা চুক্তি ছাড়াই সংগ্রহ করা যেতে পারে।
পিটিশনে আবেদনকারীরা বলেন, ‘আদানির প্রস্তাবটি অগ্রহণযোগ্য, এটি কর্মীদের চাকরি হারানোর হুমকিতে ফেলেছে, জনসাধারণকে অসামঞ্জস্য পূর্ণভাবে আর্থিক ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে পারে এবং করদাতারা যেসব অর্থ দেন তার কোনো মূল্যায়ন এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে করা হয়নি।’ তাঁরা এই সিদ্ধান্তকে কেনিয়ার সংবিধানের অধীনে ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেছেন।
গত জুলাই মাসের শুরুতে আদানি গ্রুপ কর্তৃক নাইরোবি বিমানবন্দর পরিচালনার ইজারা পাওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। বিষয়টি শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দেয়। কেনিয়ান অ্যাভিয়েশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সদস্যরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিমানবন্দর আটকে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ তাঁদের ওপর ব্যাপকভাবে চড়াও হয়।
শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি, এই চুক্তি বিমানবন্দরে কর্মরত স্থানীয়দের চাকরিচ্যুত করবে। তবে কেনিয়ার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিমানবন্দরে পুরোনো অবকাঠামোকে আরও প্রশস্ত করতে নতুন টার্মিনাল ও রানওয়ে নির্মাণের জন্য আদানির সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন জরুরি ছিল।