লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুরে বিভিন্ন দূর্নীর্তির অভিযোগে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মাসুদ রানার প্রত্যাহারের দাবিতে অফিস ঘেরাও ও মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে একর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে লালপুর উপজেলা প্রশাসন, লালপুর থানা পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দুইদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দলিল লেখক সমিতির মাধ্যমে সেবাগ্রহিতাকে জিম্মি করে প্রতি দলিলে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে ঘুষ নেন সাব-রেজিস্ট্রার মাসুদ রানা। মাসুদ রানা নাটোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের আস্তাভজন হওয়ায় ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তিনি মাত্র ৩ বছর সরকারি চাকুরী করেই রাজশাহীতে দুইটি ফ্ল্যাট ও বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে না পারেন সেজন্য সমিতির টাকা দিয়ে তিনি রেজিস্ট্রি অফিস এলাকায় সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট গঠন করে বিভিন্ন দূর্নীতিমূলক কর্মকা- করে আসছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সাব-রেজিস্ট্রার মাসুদ রানা বলেন, দলিল লেখক সমিতির কয়েকজন নেতা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই অফিসকে জিম্মি করে রেখেছিল। এসময় ফিরোজ, কাইয়ুম, আনিসুজ্জামান বাবু, কামরুজ্জামান লাভলু, রান্টু, হযরতআলী ও জহুরুল নামক ৮ জন দলীল লেখকের নাম উল্লেখ করে বলেন এসব দলিল লেখক নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক চাপের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করার কথা বলে একটি চিঠি দেন সাব রেজিস্ট্রার মাসুদ রানা। তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ওই চিঠিতে । তাদের লাইন্সেন বাতিল করার জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
সাব রেজিস্ট্রার মাসুদ রানার ব্যবহৃত দেড় কোটি টাকা দামের গাড়িটির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন আমার শশুড় গাড়িটি উপহার দিয়েছেন। এছাড়া তিনি সেচ্ছায় বদলীর জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন বলে জানান তিনি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্থানীয় সমন্বয়ক রিদু হোসেন তার বক্তব্যে বলেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় আমরা আমাদের কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করছি। আশা করি প্রশাসন এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন। আন্দোলনের শরিক হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সবাইকে যার যার বাসায় ফিরে যাওয়ার আহবান জানান।
এবিষয়ে লালপুর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) শিমুল আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীদের লিখিত ভাবে সাব-রেজিস্ট্রারের প্রত্যাহারের আবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।