বৈষম্যবিরোধী চা শ্রমিকদের দাবী আদায় না হলে ৮ সেপ্টম্বর লেবার হাউজের সম্মুখে বিক্ষোভ মিছিল

মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার : শ্রীমঙ্গল চা শ্রমিক ইউনিয়নের দুর্নীতি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী চা শ্রমিক আন্দোলনের ব্যানারে এক দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েছেন ৪০ টি চা বাগানের চা শ্রমিক ছাত্র ও যুবক । গত ৬ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার এস আর কাওরান রেষ্টুরেন্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী চা শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ লিখিত অভিযোগে বলেন- বিগত ২০০৬ সাল থেকে অধ্যাবধি চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও শ্রীমঙ্গল প্রধান কার্যালয় লেবার হাউস বাংলাদেশ সরকারের শ্রম অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়ে এসেছে। যা চা শ্রমিকদের অধিকার হরন সহ তাদের অধিকারের কথা বলার কণ্ঠ রোধ করে রেখেছে। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন স্বাধীনভাবে চা শ্রমিকদের দ্বারাই পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে শ্রম অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট মহলে অনেক আবেদন করেও কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি। লুটেরা চা শ্রমিক নেতা ও শ্রম অধিদপ্তরের কূটকৌশলে সাধারণ চা শ্রমিকসহ তাদের পোষ্যরা নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। শ্রম অধিদপ্তরের প্রহসনের নির্বাচন দ্বারা তাদের একটি পক্ষকে জিতিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারি কোষাগারের টাকা লুটপাট করেছে। অপরদিকে বর্তমান সাধারণ দরিদ্র চা শ্রমিকের কষ্টার্জিত চাঁদার টাকা লুটপাট করার পায়তারা করছে। বাংলাদেশের চা শিল্পে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটে চলেছে। চা বাগান হতে সাধারণ শ্রমিকদের উচ্ছেদ, কথায় কথায় ব্যক্তিগত বিরোধে জেরে চা শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত করা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের কোন ট্রেড ইউনিয়নে সরকারী কোন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনার হতে পারেন না। কিন্তু শ্রম অধিদপ্তর চা শিল্পের ট্রেড ইউনিয়নের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন। যা উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপন্থী। যারা ট্রেড ইউনিয়ন দখল করে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে তাদের দ্বারা চা শ্রমিকদের যে সীমাহীন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শ্রম অধিদপ্তরের পালিত শ্রমিক নেতাদের দ্বারা বিগত ১৬ বছরে দেয়া সাধারণ শ্রমিকের ২৫ কোটিরও বেশী টাকা আত্মসাৎ করেছে। চা শ্রমিকদের ২ বছরে এখনো কোন মজুরি চুক্তি বৈঠক হয়নি। যার কারণে শ্রমিকরা প্রায়ই ৩৬ হাজারা টাকা মজুরি হতে বঞ্চিত হয়েছে। চা শ্রমিকরা গ্রাচ্যুয়িটি ফান্ড থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বহু বাগান বন্ধের পথে। অনেক চা শ্রমিকের সন্তানেরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। বাসস্থান ও নি¤œমানের চিকিৎসা সেবা চা শ্রমিকদের আরো নাজেহাল করে তুলেছে। ২০২০-২০২২ সালের ঘোষিত মজুরি থেকে বকেয়া মজুরি ২০,৫০০ টাকা হতে ১লক্ষ শ্রমিক বঞ্চিত হয়েছে। চা শ্রমিকের বিভিন্ন সমস্যা জানিয়ে অবৈধ কমিটিকে বাতিল করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নে এডহক কমিটি দেওয়ার জন্য একদফা দাবী পেশ করেন নেতৃবৃন্দ। ৭ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে কোন কোন সুরাহা না হলে ০৮ সেপ্টম্বর শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের লেবার হাউজের সম্মুখে বিক্ষোভ মিছিল এর মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলন করার ঘোষনা দেন বৈষম্যবিরোধী চা শ্রমিক আন্দোলনের নেত্রী গীতা রানী কানু, জনক লাল দেশোয়ারা জনী, রফি মোহন নুনিয়া প্রমুখ।