ভিসি’র পদত্যাগের দাবিতে যবিপ্রবি’তে ‘মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন’

// ইয়ানূর রহমান : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ মিছিল ‘মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন’ করেছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসি ও তার চাটুকাররা মাত্রাতিরিক্ত অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে একক আধিপত্য বিস্তার করতে তিনি (ভিসি) কথায় কথায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন বলে ক্ষমতার জানান দিতেন।
আগামী শনিবারের মধ্যে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয়া হয়। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর দুর্নীতিবাজ ভিসি সম্মান নিয়ে ফিরতে পারবেন না। তাকে টেনে হেঁচড়ে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

বেলা সাড়ে ১১ যবিপ্রবির প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় তারা উপাচার্যকে আগামী শনিবারের মধ্যে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দেন অন্যথায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আরো
কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয়া হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উসামাহ, সজীব হোসেন, রাফি, উর্মী দোলেনুর, আকিব ইবনে সাঈদ, ইসমাঈল, সুমন আলী প্রমুখ। এসময় বক্তারা ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদসহ চাটুকারদের নানা অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরেন। ভিসিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দালাল আখ্যায়িত করে সাধারণ
শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে মোহাম্মদ উসামাহ বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট যবিপ্রবি ভিসি বিগত ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের উপর হামলায় সহযোগিতা করেছে তাই আমাদের এই আন্দোলনের প্রধান দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরাচার ভিসিসহ প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, শিক্ষর সমিতি সভাপতিসহ সকল দালাল সিন্ডিকেটদের পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়াও কোন ধরণের রাজনৈতিক দলের জায়গা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা চাই না। যদি উপাচার্য পদত্যাগ না করেন তবে আগামী শনিবার থেকে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।

সজীব হোসেন বলেন, যবিপ্রবি ভিসি তার মেয়াদ কালীন সময়ে যে উন্নয়ন গুলো করেছে সেগুলো ছিল বিগত উপাচার্য সাত্তার স্যারের আমলের। ভিসির কাছে যখন আমরা কোন দাবি নিয়ে যেতাম তখন তিনি মিথ্যা আশ্বাস দিতেন কিন্তু তিনি সেটা বাস্তবায়ন করেননি। এই মিথ্যুক দুর্নীতিবাজ ভিসিকে আমরা চাই না। ভিসি’র
উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনি জানেন পতনের চেয়ে পদত্যাগ উত্তম তাই স্বসম্মানে পদত্যাগ করুন।

আরেক শিক্ষার্থী উর্মী বলেন, আমরা কোন রাজনৈতিক দলের থেকে এই আন্দোলন করছি না। আমাদের বিরুদ্ধে এরকম গুজব ছড়ানো বন্ধ করুন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো ট্যাগ দিলে তারা তাদের কর্মসূচি থেকে সরে যাবে না।
আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীর আন্দোলনকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে তাদের প্রত্যেককে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। ভিসির বিরুদ্ধে লিফট দুর্নীতি, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আমরা চাই এমন একজন শিক্ষার্থীবান্ধব ভিসি আসুক যিনি আমাদের কথা শুনবে।

আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন এহেন কোনো অনিয়ম দুর্নীতি নেই যা তিনি করেননি। তিনি ও তার অনুসারীরা চাটুকার হিসেবে পরিচিত। একক আধিপত্য বিস্তার করার জন্য ভিসি কথায় কথায় নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর লোক বলে জানান দিতেন। তার মতো দুর্নীতিবাজের এই
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার কোনো অধিকার নেই।

সাব্বির হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন নানা দুর্নীতিতে সমালোচিত। তিনি শেখ হাসিনার দালালি করতেন। এছাড়া কারণে-অকারণে মিথ্যা কথা বলতেন। ভেটেরিনারি অনুষদ ঝিনাইদহে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য করার আশায় তিনি ভিসি পদ ধরে রাখতে মরিয়া হয়েছেন। পতদ্যাগ
করার জন্য তাকে বাধ্য করা উচিত।

প্রসঙ্গত, ড. আনোয়ার হোসেন ২০১৭ সালের ২০ মে যবিপ্রবিতে ভাইস চ্যান্সেলর পদে যোগদান করার পর থেকে নানা অনিয়ম দুর্নীতি করে চলেছেন।#