// নাটোর প্রতিনিধি
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার নাটোরে আহবান করা বিএনপির সমাবেশে হামলায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রবীণ নেতা মো: শহিদুল ইসলাম বাচ্চু ও প্রধান অতিথি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ সাতজন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রবীণ নেতা মো: শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আরো রয়েছেন, জেলা শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন চপল, পৌর বিএনপির ৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হিটলু। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ ও যুগ্ম সম্পাদক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় নাটোরে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারীরা। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু শহরের ফৌজদারী পাড়ার বাসা থেকে বিএনপি অফিসে আসার সময় নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে রাস্তার কাঁদা মাটির মধ্যে তাকে ফেলে রাখে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে আসার পথে জেলা শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন চপলকে মারপিট করে। পরে ১০টার দিকে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপির নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বক্তব্য শুরু করলে পুনরায় সমাবেশে হামলা করা হয়। হামলায় বুলবুলসহ আরো কয়েকজন এ সময় আহত হয়। এছাড়া সমাবেশে যোগ দিতে আসা অরো অনেক নেতাকর্মীকে শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা করে মারপিট করা হয়েছে বলে তারা দাবী করেন। রহিম নেওয়াজ বলেন, যারা হামলা করেছে তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। নাটোরে একের পর এক হামলার পরেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব সন্ত্রাসীরা একের পর এক হামলা করার সাহস পাচ্ছে। এসব হামলার ঘটনার সময় পুলিশ নির্লিপ্ত থাকারও অভিযোগ করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব। সমাবেশের সময় হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরন ঘটায় এবং গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ করেছেন যুগ্ম সম্পাদক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন অভিযোগ করে বলেন, আজকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে যুবলীগ কর্মী রাসেদুল ইসলাম কোয়েলের নেতৃত্বে প্রায় ৩০ জন যুবলীগ কর্মী এ হামলা চালায়। তারা বিএনপি অফিসের সমাবেশ লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপসহ গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আওয়ামী লীগের এই বাহিনী এর আগেও আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ স¤পাদক আবুল হোসেনসহ অন্তত ২০ নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, বিরোধী দলের সমাবেশে যারা হামলা করেছেন তারা যুবলীগের কেউ নন।
জেলা যুবলীগের আহবায়ক বাশিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া বলেন, কে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসার পথে বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম বাচ্চু সহ ৩ জনের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। তবে কারা হামলা চালিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নয়। পুলিশ উদঘাটনের জন্য কাজ করছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তনি আরও বলেন, এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সমাবেশস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।