// সঞ্জু রায়, বগুড়া:
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ডিএসএ) অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক’র পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি।
সদর উপজেলা নির্বাচনের একদিন পর গত ৩০ মে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম এর কাছে সুলতান মাহমুদ খান রনি তার পদত্যাগ পত্র জমা দেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষে পদত্যাগপত্রটি অফিসিয়ালভাবে গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গোপনীয় শাখার উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ শিপুল হক।
পদত্যাগ পত্রে সুলতান মাহমুদ খান রনি উল্লেখ করেন, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ডিএসএ) অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক’র দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলেন। পদত্যাগ পত্রটি তিনি অনুলিপি হিসেবে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতি ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবরও প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, সুলতান মাহমুদ খান রনি গত ২৯শে মে সদ্য সমাপ্ত হওয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন যিনি সর্বশেষ ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনেও স্রোতের বিপরীতে দলের স্বার্থে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধ করেছিলেন। সেবার বিজয়ী না হলেও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রনি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন বগুড়ার আপামর জনসাধারণের মাঝে। পরবর্তীতে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তৃণমূলে পৌঁছে দিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখেন রনি যা সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুধু তাই নয় রাজনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতি অঙ্গনের বিকাশেও ভূমিকা রেখে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন বগুড়ায়। উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হলেও পরে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করেছেন প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে। ছাত্রনেতা থেকে জননেতা সুলতান মাহমুদ খান রনি সে সময় স্বাক্ষর রেখেছেন তার দক্ষ নেতৃত্ব ও গণমানুষের সেবা করার মানসিকতার। পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনের বিকাশে জেলা ক্রীড়া সংস্থার এক অন্যতম দিকপাল হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে বড় বড় টুর্নামেন্ট পরিচালনাতেও। শুধু তাই নয় পাড়া মহল্লার ক্রীড়াঙ্গনকে উজ্জীবিত রাখতে সারা বছর তার নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ছোট বড় বিভিন্ন ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল টুর্নামেন্ট। বর্তমানে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি পালন করছেন জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দায়িত্বও। তবে ভোটের একদিন পর জেলা ক্রীড়া সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্ব থেকে ক্রীড়ামোদী স্বচ্ছ নেতা রনির সেচ্ছায় পদত্যাগ নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্নের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বগুড়ার সুশীল সমাজের একাধিক প্রতিনিধি মনে করেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দীনের স্নেহভাজন হওয়ায় তার মৃত্যুর পর নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি করতে হয়েছে রনিকে। যদিও কখনোই কোন অভিযোগ করেননি সাবেক এই ছাত্রনেতা। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিকূল সময়েও আওয়ামী লীগের সাতমাথা রাজনৈতিক কার্যালয়ে সরব উপস্থিতি মেলে সুলতান মাহমুদ খান রনির। এদিকে সারা বছর জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া রনি হঠাৎ কেন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলেন জানা যায়নি তার নিজ মুখেও।