// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এপ্রিলের প্রথম দিন থেকেই ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বইছিল মাঝারি তাপপ্রবাহ। শনিবার ( ৬ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এরআগে ১ এপ্রিল চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রী ঈশ্বরদীতে রেকর্ড হয়েছিল। ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে তীব্র রোদ ও অসহনীয় গরমে দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে রিকশা চালক, কুলি ও নিম্ন আয়ের দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ। গরমের তীব্রতায় রোজাদারদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। প্রখর রোদে ঘাম ঝড়ানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। শিশুদের গরমের তীব্রতায় দীর্ঘসময় ধরে পুকুরে নেমে ঝাপাঝাপি করতে দেখা গেছে।
গত কয়েক দিনের তাপদাহে শহরের পোস্ট অফিস মোড় সংলগ্ন ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন গলে যেতে শুরু করেছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চাকায় পিচ আটকে যাচ্ছে। ফলে চালকরা ধীর গতিতে গাড়ী চালাচ্ছে।
তীব্র খরায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে উপজেলা জুড়ে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। পৌরসভার পানি বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী প্রবীর বিশ্বাস বলেন, সাপ্লাই লাইনে পানি সরবরাহের জন্য সবকটি মেশিন চালিয়েও পানি সরবরাহ করতে কষ্ট হচ্ছে। খরা মৌসুমের শুরুতেই এবারে ভূগর্ভস্ত পানির স্তর অনেক নীচে নেমে গেছে।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে মালগুদাম সেডে রেলের মালামাল খালাসের কাজে নিয়োজিত কুলি নূরুল ইসলাম বলেন, তীব্র রোদে বাতাস গরম। শরীর ঝলসে যাওয়ার মতো অবস্থা। শরীর দিয়ে অঝোড় ধারায় ঘাম ঝরছে। কাজ করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
আরামবাড়িয়া বাজারের কাঠ মিস্ত্রি আজগর আলী বলেন, চুক্তিতে আমরা এখানে কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কাজ করি। আজ গরমের তীব্রতায় ভালভাবে কাজ করতে পারছি না। কিছুসময় পর পর বসে বিশ্রাম নিচ্ছি। রিকশা চালক হাশেম শেখ বলেন, প্রখর রোদে সড়ক উত্তপ্ত। রাস্তায় রিকশা চালানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে। গরমের তীব্রতায় পানিশূন্যতায়ও অসুস্থ হচ্ছেন কেউ কেউ। তীব্র রোদ ও অসহনীয় গরমে রাস্তাঘাট-হাটবাজারে লোকসমাগম কমে গেছে। জরুরি কাজ না থাকলে মানুষজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। রোদের প্রখরতায় রাস্তার পিচ তপ্ত উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। রোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রোজাদাররা।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, ঈশ্বরদীসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় পারদের কাঁটা তীব্র তাপপ্রবাহ ছঁয়েছে। গত সোমবার (১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে দেশের সর্বোচ্চ মাত্রা ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আজ শনিবার (৬ এপ্রিল) বেড়ে হয়েছে ৪০ ডিগ্রী। চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ##