// রানা আহম্মেদ অভি, ইবি।
গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ে দ্বৈতমত পোষণ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। এনিয়ে একদিকে গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতির পরিবর্তে নিজস্ব ভর্তি পদ্ধতিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষক নেতা, অন্যদিকে নোট অব ডিসেন্টে দিয়ে গুচ্ছের পক্ষে মত দিয়েছে শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতিসহ ছয় শিক্ষক নেতা। শনিবার (২৩ মার্চ) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে এসব সিদ্ধান্ত নেয় তাঁরা।
শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ থেকে গুচ্ছের পক্ষে মত পোষণ করেন- সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল, অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান, ড. মোঃ আমজাদ হোসেন এবং মোঃ মাজেদুল হক।
নোট অব ডিসেন্টে তাঁরা উল্লেখ করেন, ‘গত ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছি। তবে আমরা ছয় জন শিক্ষক নেতারা মনে করেছি যেহেতু ইতোমধ্যে ১৫ হাজারের অধিক আবেদনকারী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছের কেন্দ্র হিসেবে বাছাই করেছেন এবং ইউজিসির ছয় জন নেতাকে ০৬ ফেব্রুয়ারি আহ্বান করেন যে, শিক্ষকনেতারা না যাওয়ার প্রেক্ষিতে ০৮ ফেব্রুয়ারি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও গুচ্ছের ২০২৩-২৪ ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে আসতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেতাদের অনুরোধ করেন।’
নোট অব ডিসেন্ট মতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক বলেছেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দিয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দিতে তাঁকে শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।’
নোট অব ডিসেন্টে শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা ০৬ জন শিক্ষকেরা মনে করি বর্তমান পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি সুরক্ষা ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সংশয় নিরসনে এ বছরের মত গুচ্ছভুক্ত হয়েই ইবি ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করবে বলে আমরা মনে করি। এছাড়া বিভিন্ন পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে সকল বিভাগের সভাপতিকে বিষয়টি জানানোর বিষয়েও মত প্রকাশ করে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়ে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের শিক্ষকেরা বলেন, ‘আমরা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু জানুয়ারি মাসের ওই সভার পরে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ইউজিসি, সরকারের বিভিন্ন মহল ও গুচ্ছের আহ্বায়ক যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি স্যারের বক্তব্য হতে সুস্পষ্ট হয়েছে যে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সরকারের অভিপ্রায় রয়েছে। এছাড়াও, এ বছরে ১৫ হাজারেরও অধিক ভর্তিচ্ছু কেন্দ্র হিসেবে আবেদন করেছেন। তাই, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের দূর-দুরান্তের অভিবাবকদের দুশ্চিন্তা নিরসনে আমি মনে করি এই বছরের মত গুচ্ছের বাইরে যেয়ে নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তির নামে কালক্ষেপণের আর সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ১২৭তম সভায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছের বাইরে গিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।