// নাজিম হাসান,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর আম বাগান গুলোতে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত। তবে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব বৈরী আবহাওয়ার কারণে গতবারের চেয়ে রাজশাহীতে আমের গাছে মুকুল অর্ধেকের চেয়ে কম এসেছে বলে চাষিরা জানায়। তাপমাত্রার ধীরগতির বৃদ্ধি প্রকৃতিতে নানা পরিবর্তনে মুকুল আসার সময়ও শেষ। কোন ধরণের আশা নেই মুকুল আসা নিয়ে। কারণ ফাল্গুন মাস শেষের দিকে। এ মাসেই গজাবে গাছে নতুন পাতা। ফলে গাছে মুকুল না আসার কারণে এ এলাকার আম চাষিদের কপালে দেখা দিয়েছে চরম ভাঁজ। সেই সাথে ব্যাপক হতাশায় ভুগছে মৌসুমী আম চাষিরা। তবে আমের রাজধানী রাজশাহীর আম চাষিরা মুকুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল গুলোকে রক্ষা করা গেলে রাজশাহী অঞ্চলে আমের ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। আগাম জাতের কিছু আমের গুটি ফুটলেও অধিকাংশ গাছে মুকুলের সমরাহে ছেয়ে আছে। আমের ভাল ফলন পাওয়ার আশায় বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত এখানকার আম চাষিরা। তবে হঠাৎ করে মাঘের শেষে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে বাগানের মুকুলের ক্ষতির আশংকা করছে বাগানীরা। আকাশের মেঘাচ্ছন্ন ভাব আবহওয়ার এ বৈরি রূপ না কাটায় পোকা ও ছত্রাকের আক্রমণের আশংকা বাগানীদের কাটছে না। যদিও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত না হয়ে আমের গুটি ফোটার আগে বালাইনাশক ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ কৃষিবিদদের। মুকুল রক্ষার জন্য তারা বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। তবে হোপার পোকা, ছত্রাকের আক্রমণ ও প্রতিকুল আবহাওয়ার শঙ্কায় তিনি দুশ্চিন্তাই রয়েছেন। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এ অঞ্চলে প্রতি বছর প্রায় ৩‘শ জাতের আম উৎপন্ন হয়। এগুলোর মধ্যে এ বছর ভাদুরিগুটি, বনখাসা, আমরুপালী, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, মোহনভোগ, ক্ষিরসাপাত, রাজভোগ, রানিভোগ, রানিপছন্দ, সিন্দুরা, সুবর্ণরেখা, কুয়াপাহাড়ি, নাকফজলি, ফজলি, চিনি ফজলি, সুরমাই ফজলি, চিনি মিসরি, জগৎমোহিনী, রাখালভোগ, রাঙাগুডি, গোবিন্দভোগ, তোতাপুরী, মিশ্রিকান্ত, জালিবান্ধা, সূর্যপুরী, কাঁচামিঠা, কলামোচা, শীতলপাটি, বোম্বাই, হিমসাগর, ফজলি, আম্রপলি, আশ্বিনা, বৃন্দাবনী লক্ষণভোগ, কালীভোগ, তোতাপরী, দুধসর, লকনা জাতের আমের চাষ বেশি হয়েছে। বৈশাখ মাসে আম পাকা শুরু হয় এবং আশ্বিন ও কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত বাজারে সর্বশেষ আম পাওয়া যায়। এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন জানান্্এবছর জেলাজুড়ে ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমির আম বাগানে ২ লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গুঁটি আম থেকে শুরু করে ফজলি, বারি-৪ জাতের আমের গাছে মুকুল দেখা যাচ্ছে বেশী। তবে ভরা মৌসুমেও আমবাগানে আশানুরূপ মুকুল আসেনি। এতে চাষিদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তারা শেষ সময়ে বাগানগুলোতে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। গাছের গোড়ায় সেচ দিচ্ছেন। রাজশাহী কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ জানান, এবার আবহাওয়ার কিছুটা হেরফের হওয়ায় বাগানগুলোতে মুকুল আসতে বিলম্ব হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বাগানে মুকুল এসেছে।#