৩৭ বছর দাতব্য চিকিৎসালয় চালানো আয়ূব হোসেন আর নেই

/ চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি

গরীব দুখী আর্ত পীড়িতের সেবায় প্রায় ৩৭ বছর দাতব্য চিকিৎসালয় চালিয়ে আসা শিক্ষক আয়ূব হোসেন (৮২) চলে গেলেন না ফেরার দেশে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পাবনার চাটমোহরের এ কৃতি সন্তান সোমবার (১৯ ফেব্রæয়ারী) রাত ১ টার দিকে সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৩৭ বছর যাবৎ চাটমোহর পৌর সদরের নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত জহুরা-মোজাহার হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয় পরিচালনা করে আসছিলেন মরহুম এ শিক্ষক। ১৯৬৪ সালে তিনি চাটমোহর রাজা চন্দ্রনাথ ও বাবু সম্ভুনাথ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। পল্লী চিকিৎসক প্রশিক্ষণ ছিল তাঁর। পাশাপাশি করতেন হোমিও প্যাথিক চিকিৎসা। এলাকার গরীব দুঃখী সুবিধা বঞ্চিতদের কথা ভেবে ১৯৮৭ সালে নিজের বাড়িতে খালা-খালুর নামে গড়ে তোলেন জহুরা-মোজাহার হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়। সেই থেকে মৃত্যু অবধি গরীব-দুস্থ্য রোগিদের বিনা মূল্যে ব্যবস্থাপত্র ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করতেন। প্রতি শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত গড়ে প্রায় ৮০ জন নারী, পুরুষ, শিশু চিকিৎসা নিতেন তাঁর গড়া দাতব্য চিকিৎসালয়ে। নিজের ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ সরবরাহ করতেন। এমন একটি ভাল কাজ করায় প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখতে এলাকার কেউ কেউ তাকে কিছু সাহায্যও করতেন। অনেকে যাকাত, ফেতরার টাকাও দিতেন এ প্রতিষ্ঠানে। সাড়ে ৫ শতাংশ জমি প্রতিষ্ঠানের নামে দান করে ওয়াকফ করে গেছেন তিনি। সেখানে নির্মাণ করেছেন টিনশেড দুটি বাড়ি। এ দুটি বাড়ির প্রাপ্ত ভাড়াও ব্যয় হয় এলাকার গরীব দুঃখী মানুষের চিকিৎসা সেবায়।

মানব সেবক মরহুম আয়ূব হোসেনের ছেলে রাজা জানান, “বাবা সময় গরীব দুঃখী মানুষের কথা ভাবতেন। তাদের সেবায় কাটিয়ে দিলেন সারাটি জীবন। গরীব দুঃখীর জন্য ব্যয় করতেন নিজের পকেটের পয়সাও। গত প্রায় দুই সপ্তাহ যাবৎ শ্বাস কষ্টে ভুগছিলেন। তার সন্তান হিসেবে আমরা গর্ব বোধ করি।

মরহুমের মৃত্যুতে তাঁর বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। বাদ যোহর শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে বৃগুয়াখড়া সম্মিলিত কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়।