// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটে স্বয়ংক্রিয় তাপ নিঃসরণ ব্যবস্থার অন্তর্ভূক্ত ডিফ্লেকটরের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ স্টীল কাঠামো স্থাপনের কাজ মাত্র দু’দিনেই সম্পন্ন হয়েছে। এ জাতীয় কার্যক্রমের জন্য এটি একটি রেকর্ড বলে শনিবার (২৭ জানুয়ারী) বিকেলে এতমস্ত্রয়এক্সপোর্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং রূপপুর এনপিপি নির্মান প্রকল্পের রাশিয়ান পরিচালক আলেক্সি দেইরী। স্বয়ংক্রিয় তাপ নিঃসরণ ব্যবস্থা মানুষের হস্তক্ষেপ এবং পাওয়ার সোর্স ছাড়াই নিজ থেকে কাজ করতে সক্ষম।
এতমস্ত্রয়এক্সপোর্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং রূপপুর এনপিপি নির্মান প্রকল্পের পরিচালক আলেক্সি দেইরী জানান, ‘নকশা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে দুই দিনেই ডিফেকটর স্থাপন সত্যিই একটি রেকর্ড। পরবর্তী ধাপে ডিফ্লেকটরের সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম এবং স্বয়ংক্রিয় তাপ নিঃসরণ ব্যবস্থার এয়ারডাক্ট স্থাপন করা হবে’।
তিনি জানান, ডিফ্লেকটর, স্টেইনলেস স্টীলের তৈরি একটি সিলিন্ডার আকৃতির কাঠামো, যার ওজন ২১৫টন এবং এর ব্যস প্রায় ২৫.৫মিটার। ডিফেকটর স্থাপন একটি জটিল প্রক্রিয়া যা দুই ধাপে সম্পন্ন হয়। রিয়্যাক্টর ভবনের গম্বুজে ১৩৫টন এবং ৮০টনের দুটি কাঠামো অংশ স্থাপনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য বিচ্যুতি মাত্র ১০মিমি। ডিফ্লেকটরের অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃস্থ অংশ দুটি +৬৪.৫মিটার এলিভেশনে বসানো হয়েছে। এর ফলে বর্তমানে রিয়্যাক্টর ভবনের উচ্চতা দাঁড়িয়েছে ৭৪.৮৫মিটার।
জানা গেছে, দুইজন অভিজ্ঞ জিওডেটিক প্রকৌশলী, পাঁচ জন উচ্চ দক্ষ ওয়েল্ডার এবং ৪২জন অন্যান্য বিশেষজ্ঞ এই ডিফ্লেকটর স্থাপনের কাজে অংশগ্রহণ করেন। স্বয়ংক্রিয় তাপ নিঃসরণ ব্যবস্থায় ডিফ্লেকটর একটি এরোডিনামিক কাঠামো যা ভেন্টিলেশন চ্যানেলে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি করে। পুরো ব্যবস্থাটি প্রাকৃতিক সার্কুলেশন নিয়ম অনুসারে কাজ করে। বায়ুমন্ডল থেকে বাতাস হিট এক্সচেঞ্জারে আসার পর উত্তপ্ত হয় এবং এয়ারডাক্টের মাধ্যমে রিয়্যাক্টর ভবনের ডোমের শীর্ষে অবস্থিত আইটলেট হেডারের মধ্য দিয়ে বায়ুমন্ডলে ফিরে যায়। এর ফলে রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টের শিতলীকরণ ঘটে।
প্রসংগত: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে স্থাপিত হচ্ছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টর। প্রকল্পটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২,৪০০ মেগা-ওয়াট। এই রিয়্যাক্টরগুলো সকল আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা সম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে সক্ষম। ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত জেনারেল কন্ট্রাকটের অধীনে রসাটমের প্রকৌশল শাখা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে।