// এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুরের) প্রতিনিধি: টানা শৈত্যপ্রবাহে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় সাদা সোনা খ্যাত রসুনের গাছের পাতা সবুজ থেকে হলুদ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক-কৃষাণীরা। কীটনাশক ও স্প্রে দিয়েও হচ্ছে না এই অবস্থার পরিবর্তন। তবে কৃষি বিভাগের দাবি এটি আবহাওয়া জনিত বিষয় দুশ্চিন্তার কিছু নয়। তাই এই সময়ে বাড়তি যত্ন করলে ও শৈত্য প্রবাহ কেটে গেলে রসুনের এই সমস্যা প্রকট হওয়ার কথা নয়।
সরেজমিনে সোমবার (২২ জানুয়ারী) সকালে উপজেলার গোয়ালডিহি, হাসিমপুর, কাচিনীয়া, গুলিয়ারা ও বালাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায় মাঠ জুড়ে রসুনের চাষ। গতবছর গুলোতে যেখানে রসুনের মাধ্যমে কৃষকদের ভাগ্যবদল হয়েছে কিন্তু চলতি মৌসুমে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জেঁকে বসা কুয়াশা ও শীতের তীব্রতায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। এটি টিপবার্ণ রোগ বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১৬২০ হেক্টর। যা গতবছরে ছিল ১৫০০ হেক্টর।
জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এই বছর খরচ হয় প্রায় ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবার বীজের দাম বেশী হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে বলে কৃষকরা জানায়। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৪৫-৬০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ৭-৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে এবার লাভের আশায় বেড়েছে রসুন আবাদ।
গোয়ালডিহি জমির শাহ পাড়া এলাকার রসুন চাষী রিশাদ শাহ বলেন, রসুন গাছের পাতার রং এমন পরিবর্তন হচ্ছে দূর থেকে দেখলে মনে হয় সরিষার ক্ষেত। কীটনাশক ও স্প্রে ব্যবসায়ীদের পরামর্শে পরিচর্য়া করেও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। ১ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করছি এমনিতেই বীজ ও সার-কীটনশাকে যে খরচ হচ্ছে আবার এই সমস্যায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি।
হাসিমপুর পুলহাট এলাকার রাশেদ খান গোলাপ নামে একজন বলেন, রসুনের এই সমস্যায় কৃষকরা চিন্তায় পড়ে গেছে। কেননা এই রসুন চাষে এখন অনেক খরচ আবাদের ক্ষতি হয়ে গেলেই লোকসান গুণতে হবে। এইজন্য কৃষি বিভাগকে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান এই যুবক।
বালাপাড়া গ্রামের জাকারিয়া ইসলাম বলেন, এমনিতেই চাষাবাদে খরচ বেশী তারউপর এই অবস্থা চিন্তায় রেখেছে। কৃষি বিভাগ তো বলছে যে আবহাওয়ার কারণে এমন হচ্ছে আতংকের কিছু নাই।
খামারপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ. ম. জাহেদুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সবসময় ক্ষেত পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করতেছি। আশাকরি কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, এটা স্বাভাবিক বিষয়। এবার শীত বেশী হওয়ায় টিপবার্ণ রোগটা বেড়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে এই অবস্থার উন্নতি হবে। কৃষকদের সচেতনতার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তাই আতংকিত না হয়ে যেকোনো প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।