// বিশেষ প্রতিনিধিঃ
[তারা ইতোমধ্যে ৯কোটি টাকার ব্রিজ নির্মান করেছেন যা ভেঙ্গে ফেলতে হবে। এখন আবার নতুন করে প্রায় ৪ কোটি টাকা অপচের পায়তারা চলাচ্ছেন।]
পাবনা শহরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত মৃতপ্রায় ইছামতি নদীর প্রাণ ফিরে পাওয়ার জন্য এবছরের ৩১ অক্টোবর একনেক সভায় ১হাজার ৫শত ৫৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
দেশের ২২ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মো. সাহাবুদ্দিন এর অন্যতম একটি সফল প্রচেষ্টা এই প্রকল্প। ‘ইছামতী নদী পুনরুজ্জীবিতকরণ প্রকল্প’ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন হওয়ায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার সভাপতি অধ্যাপক এম এম মহবুব আলম ও তার আন্দোলনকারী সহযোদ্ধারা ।
জানা যায়, নদীর দুইপাড় দখল করে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলা প্রভাবশালী দখলদারদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খনন করে মৃত এ ময়লা-আবজর্নায় দুর্গন্ধ ও মশা-মাছির আবাসস্থলে পরিণত হওয়া ভাগাড়, ইছামতি নদীকে প্রান ফিরিয়ে নদীর দুই পাড়ে পিলার স্থাপন করে ১৬ মিটার উঁচু ২৩টি ঝুলন্ত ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। যার নিচ দিয়ে অনায়াসে চলবে বড় বড় নৌকা। পানি থাকবে বিনা বাধায় প্রবাহমান।
কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে পরিকল্পনা ছাড়াই ইছামতি নদীর উপর কোটি কোটি টাকা খরচ করে ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। যেগুলো নদীর মধ্যে দুইটি পিলার স্থাপন করে নদীকে ভরাট করা হবে। যা একনেকে পাস হওয়া পরিকল্পিত প্রকল্পকে বাধা সৃষ্টি করবে। ফলে নির্মাণের পর আবার সেটিকে ভেঙে ফেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী পুনরায় নির্মাণ করতে হবে।
একদিকে আন্দোলনকারীরা ইছামতি পুনরুজ্জীবিত প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের আন্দোলন করে যাচ্ছেন যাতে রাষ্ট্রের টাকা অপচয় না হয়, সঠিকভাবে খরচ হয়। অন্যদিকে এলজিইডি ইচ্ছে মতো পরিকল্পনা করে সেতু স্থাপনের উদ্যোগে ব্যস্ত।
এর আগে খেয়া ঘাট ও রূপকথা রোডে প্রায় সোয়া ২কোটি টাকা করে এবং লালু সরদারের বাড়ির সামনে (বাংলাবাজারে) প্রায় সাড়ে৪ কোটি টাকা মোট ৯ কোটি টাকা ব্যায়ে তিনটি সেতু নির্মাণ করেছেন তারা। সে সময় ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার আন্দোলনকারীরা বাধা দেয়ার অনেক চেষ্টা করলেও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এলজিইডি এই ব্রিজ তিনটি নির্মাণ করেছে। যা ইছামতি নদী পুনরুজ্জীবিত প্রকল্পের কাজ শুরু হলে ভাঙ্গা পড়বে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সরদারপাড়া ঘাটের ব্রিজটি অক্ষত রয়েছে। এটির উপর দিয়ে যাত্রীবাহী অটোরিক্সা, সিএনজিসহ বিভিন্ন যান চলাচল করছে। এমনকি পণ্য বোঝায় ট্রাক-পিকাপও চলাচল করতে দেখা গেছে। ঠিকাদার রিজন প্রামানিক ব্রিজটির পাশে নদীর ভেতর মাটি ফেলে পার্শ্ব রাস্তা তৈরি করছেন। যাতে করে সেটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করার সময় সাধারণের চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে।
এখন প্রশ্ন ৪০ মিটার লম্বা, উচ্চতা ৫ মিটার ও নদীর ভেতর ২টি পিলার স্থাপন করে ৩কোটি ৯০লক্ষ টাকা চুক্তি মূল্য নির্ধারণের এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে আদৌ সেটি বহাল থাকবে কিনা? নাকি একনেকে পাস হওয়া ইছামতি নদী পুনরুজ্জীবিত প্রকল্প (যার পরিকল্পনায় নদীর মধ্যে কোন পিলার স্থাপন নাই)
চালু হলে বাপাউবোর পরিকল্পনায় থাকা ১৮ নং এই ব্রিজটি আবার ভেঙে ফেলতে হবে!
তারা ইতোমধ্যে ৯কোটি টাকার ব্রিজ নির্মান করেছেন যা ভেঙ্গে ফেলতে হবে। এখন আবার নতুন করে প্রায় ৪ কোটি টাকা অপচের পায়তারা চলাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান মন্ডলের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে মুখ খোলেননি।
তবে ঠিকাদার রিজন বলেন একনেকে পাস হওয়া পরিকল্পনা মাফিকই হবে। সিডিউল এ কি লেখা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন উচ্চতা বা মাপ সিডিউলে লেখা থাকেনা। তিনি জানান আমি এখনও সিডিউল হাতে পাইনি। সেখানে কাজের বিবরণ দিয়ে কোনও বোর্ড টানানোও চোখে পরেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন আমাদের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান আই ডব্লিউ এফ এম (বুয়েট) এর গবেষণার আলোকে প্রকল্পটি পাস হয়েছে। এর আওতায় ২৩ টি ব্রিজ হবে। এখানে যদি অন্য কোন প্রতিষ্ঠান ব্রিজ নির্মাণ করতে চান তাহলে আমাদের সাথে পরামর্শ করে করাই সমীচীন হবে বলে আমি মনে করি।