// নাটোর প্রতিনিধি
মহান মুক্তিযুদ্ধে নাটোরের মানুৃষকে যিনি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সেই প্রশিক্ষক শহীদ ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমানের স্বীকৃতির দাবী জানিয়েছেন তার ছেলে ও মেয়ে। নাটোরের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বা কোন স্মৃতি স্তম্ভের নাম ফলকেও তার নামটির ঠাঁই হয়নি। অথচ নাটোরের সকল মুক্তিযোদ্ধারাই তার বীরত্বগাথার কথা জানেন। মঙ্গলবার নাটোরে আয়োজিত শহীদ ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমানের স্মরণ সভায় অতিথিরা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের জেলা খাদ্য বিভাগ কার্যালয় চত্বরে এই সভার আয়োজন করে জেলা খাদ্য বিভাগ ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খন্দকার রেজাউল হকের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফিরোজ আখতার মনি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রশিক্ষক জমসেদ আলী, শহীদ ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমানের আমেরিকা প্রবাসী বড় মেয়ে সিতারা নাহিদ এবং অস্টেলিয়া প্রবাসী ছোট ছেলে হাফিজ মনসুর রহমান, লেখক গবেষক খালিদ বিন জালাল বাচ্চু ও খাদ্য বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, শহীদ ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধকালীন সেনাবাহিনী থেকে প্রেষণে নাটোর মহকুমা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ঐ সময় অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেলেও, সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে শহীদ ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমান নাটোরের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে বর্তমান রাণীভবানী সরকারি মহিলা কলেজ মাঠে প্রশিক্ষণ প্রদান করতেন। জানাজানির পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাকে আটক করে। পরবর্ত্তীতে তাঁর আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমানের বীরত্বপূর্ণ অবদান নিয়ে গবেষণা এবং ন্বীকৃতির দাবী জানান বক্তারা। তার মেয়ে সিতারা নাহিদ বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর তার মা মারা গেছে। তখনও তার মা স্বামীর কোন স্বীকৃতি দেখে যেতে পারেননি। তিনি বলেন, আমাদের অর্থের কোন অভাব নেই, পিতার পেনশনের একটি টাকাও তার মা কখনো সরকারের নিকট থেকে গ্রহণ করেননি। তাই অর্থ নয়, তারা চান পিতার স্বীকৃতি ও সম্মান। খাদ্য বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি দাবী জানান। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর হলেও এমন আয়োজন করায় খাদ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তার ছেলে হাফিজ মনসুর রহমান।