নাটোর প্রতিনিধি.
নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়ইগ্রাম) আসনে নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠতে না উঠতেই শুরু হয়েছে একের পর এক হামলার ঘটনা। মঙ্গলবার সন্ধায় গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে জামিনে বের হয়েই সতন্ত্র প্রার্থীর দুই সমর্থকের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। আহত সতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক নাজিরপুর বাজারের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম ৩৭) ও খালেক মোল্লা’র ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩৫)। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।
নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উজ্জল হোসেন জানান,‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ আসনে নৌকা মনোনিত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ডা.সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী এবং সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন প্রয়াত সংসদ সদস্যের ছেলে আসিফ আব্দুল্লা বীন কুদ্দুস শোভন। সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে শোভনের নির্বাচনী প্রচারণা করে যাচ্ছেন তারা। গত (১৭ই ডিসেম্বর) সন্ধায় শোভনের একটি কর্মী সভা হচ্ছিলো নাজিরপুর বাজারে। সেই কর্মী সভায় যোগ দিতে নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন শাহ আসছিলেন। পথিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয় ইউপি সদস্য আলমের নেতৃত্বে। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়। মঙ্গলবার অভিযুক্ত আসামীরা জামিনে বেরিয়েই গোডাউন মোড়ে শরিফুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই শরিফুলের বাম পা ভেঙে যায় এবং সিরাজুল ইসলামের ডান পা বাম হাত ভেঙে যায়। এছাড়াও দুইজনের সমস্ত শরীরে এলোপাথারী চাইনিজ কুড়ালের আঘাত রয়েছে। তারা নিজেরাও সঙ্কায় রয়েছেন।’
আহত শরিফুল ইসলাম জানান,‘তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে গোডাউন মোড় দিয়ে নাজিরপুর বাজারে যাচ্ছিলেন। তখন নৌকা প্রার্থী ও নাজ্রিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী প্রামানিকের সমর্থক ইউপি সদস্য আলমের নেতৃত্বে ৮-১০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের দুজনের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। তারা সতন্ত্র প্রার্থী শোভনের সমর্থক হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.মাহমুদুল হাসান বলেন,‘দুজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে।’
নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী প্রামানিক মুঠোফনে বলেন,‘ইউপি সদস্য আলম তার সমর্থক না। আহত শরীফুল ইসলামের সাথে আলমের পূর্ব শত্রুতা থাকতে পারে। এ ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার সুযোগ নেই। অপরাধী যেই হোক দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ উজ্জল হোসেন জানান,‘ পূর্বের ঘটনায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। আজকের ঘটনাও তদন্ত করে অভিযুক্তদের নামে নিয়মিত মামলা রজু করে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা আক্তার জানান,‘খবর পেয়ে ঘটনস্থালে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে।’
সতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আব্দুল্লাহ বীন কুদ্দুস শোভন বলেন,‘প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের সন্তান তিনি। তার বাবার ব্যপক জনপ্রিয়তা ছিলো। তিনিও দুই উপজেলার জনগণের ভালবাসার দাবিতে প্রার্থী হয়েছেন। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্শ¦ান্বিত হয়ে কর্মী সমর্থকদের ভয় দেখানোর জন্য একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে সঠিক পদক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।’
এ বিষয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য ডা.সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর মুঠোফনে বলেন,‘তার কোন সমর্থক এমন কোন কাজ করতে পারেননা। তাছাড়াও এমন ঘটনা তিনি এখন পর্যন্ত শুনেননি। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।’