আটঘরিয়ায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

// আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে হতাশার মধ্যেই আগাম শীতকালীন পেঁয়াজ আবাদ শেষ করে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার চাষিরা। গত মাসের শুরুতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে আগাম শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ শুরু করতে কিছুটা পিছিয়ে গেলেও বসে থাকেনি চাষিরা। কেউবা জমির আগাছা পরিষ্কার করছেন আবার কেউবা সেচ দেওয়ায় ব্যস্ত। তবে পোকামাকড়ের আক্রমণে সার কীটনাশকসহ বীজের মূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা তারা।

উপজেলার কয়রাবাড়ী গ্রামের কৃষক, মোঃ জামাল উদ্দিন জানান, পুরো অক্টোবর থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। নভেম্বর শেষ সপ্তাহ থেকে বাজারে উঠবে এই পেঁয়াজ। পেঁয়াজ বাজার বেড়ে যাওয়ার কারণে বীজের বাজার একটু বেশী। তাছাড়া মূলকাটা পেঁয়াজটা একটু আগাম রোপন করলে ফলনটা ভালো হয়। আমরা বিক্রি করে সুবিধা পাই।

উপজেলার পাটেশ^র গ্রামের কৃষক মোঃ শিহাব হোসেন বলেন, পেঁয়াজ আবাদে তো সার-বিষের অনেক দাম আমরা গরীব মানুষ এত দাম দিয়ে কিভাবে পেঁয়াজ আবাদ করব? এর কারণেই আমরা কম দামে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারছি না। এদিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগানোর উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টিবাদল বেশি হওয়ায় অনেক জমির পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ঘরে যখন পেঁয়াজ আসবে তখন ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা তো হবেই। এতে কোন সন্দেহ নাই। যেই আমাদের ঘরে ফুরিয়ে যায় তখন ২ হাজার তিন হাজার ৪ হাজার পর্যন্ত হয়ে যায়।

সচেতন কৃষকরা বলছেন, সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী কমিয়ে দিলে তারা লাভবান হবেন। সার বিষ সমকিছরুই দাম বেশী এতে তো কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ। আমাদের দাবী বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানী কম করুক। কারণ আমাদের দেশেই যে পেঁয়াজ আবাদ হয় তাতে আমাদের ৬ থেকে ৭ মাসের যোগান হয়ে যায়। সরকার যদি দুই আড়াই মাস বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানী করে তাহলে কৃষকরাও দাম পাবে এবং যারা কিনে খায় তারাও ঠিকভাবে চলতে পারবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সজীব আল-মারুফ বলেন, আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগানো প্রায় শেষ দিকে। মাঠ পর্যায়ে পোকা-মাকড় ও রোগবালাই দমনে সার্বক্ষনিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। এছাড়াও স্থানীয় জাতের আবাদ না করে উচ্চফলনশীল জাতের পেঁয়াজ আবাদে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর আটঘরিয়ায় ১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে ২১  লাখ ৬৬৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে ৩৭০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন।