বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পাবনার ঈশ্বরদী থানাধীন গাঁতী এলাকার চক আহ্লাদী গ্রামে সাড়ে ৪ বছর বয়সের সাদমান সাইম ও ৮৫ বছরের আব্দুল হাইকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ওই গ্রামেরই আব্দুল মান্নানের ছেলে মোস্তফা কামালের (৪০) বিরুদ্ধে। জানা যায় আব্দুল হাই মোস্তফা কামালের চাচা। ঘটনাটি ঘটে গত ২৫ অক্টোবর বুধবার বিকেল সাড়ে চারটায়। জানা যায় ভুক্তভোগী শিশু সাদমান ও অভিযুক্তের যমজ দুই মেয়ে ইমু ও নিমু (৪) পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় খেলাধুলা করছিল। এসময় ইমু ও নিমু গিয়ে তার বাবার কাছে সাদমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে মোস্তফা, তার বাবা আব্দুল মান্নান, ছোট ভাই ও ছোট ভাই এর স্ত্রী মিলে আগে পিছে না ভেবে শিশু সাদমান কে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চড়,থাপ্পড়, কিল, ঘুসি মেরে জখম করে। দূরে দাঁড়িয়ে থাকা শিশু সাদমানের মা সীমা খাতুন তার ছেলেকে মারতে দেখে তাকে উদ্ধারে চিৎকার করে এগিয়ে আসেন। তার চিৎকারে ভুক্তভোগী সাদমানের নানা আব্দুল হাই ও নানী জবেদা খাতুন এগিয়ে আসলে মোস্তফা কামাল ও তার দলবল তাদের উপরেও আক্রমণ করে বসে। এতে জবেদা খাতুন সামান্য আহত হন ও আব্দুল হাই (৮৫) গুরুতর জখম হন। তিনি আঘাত সহ্য করতে না পেরে সেখানেই পড়ে যান। এলাকাবাসী এগিয়ে এসে শিশু সাদমান ও বৃদ্ধ আব্দুল হাইকে উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার সাদমানকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠান কিন্তু আব্দুল হাই (৮৫) এর অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিউরো সাইন্স হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাই সেখানে বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হলেও হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেন।
তারপর সাদমান এর পক্ষে তার মা সীমা খাতুন ও বৃদ্ধ হাই এর পক্ষে তার ছেলে সৌদি প্রবাসী মোশারফের স্ত্রী কোহিতুর এ জাহান বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা না নিয়ে একটি অভিযোগ নেয়। এ ব্যাপারে থানার কোন পদক্ষেপ না পেয়ে ভুক্তভোগী পরিবার র্যাব ১২সিপিসি২ পাবনা দপ্তরে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল ভুক্তভোগী পরিবারকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন। ভীত সন্ত্রস্ত পরিবার এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হন। অগত্যা দিশা না পেয়ে ভুক্তভোগী পরিবার আজ ১২ নভেম্বর রোববার সকাল ১১ টায় মোস্তফা কামালের বিচারের দাবিতে এলাকায় একটি মানববন্ধন করেন। খবর পেয়ে এই প্রতিবেদক সেখানে গেলে ঘটনার সত্যতা মেলে। মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে থাকা এলাকাবাসী বলেন প্রশাসনের উচিত সঠিক তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িত মোস্তফা কামালসহ সকল সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা। মানববন্ধন শেষে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর ঘটনার বর্ননা দিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। দাশুড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বর মোতাহার হোসেন (৫৪) বলেন আমরা খুব চেষ্টা করেছি বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য। কিন্তু অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল কোন প্রকার সাড়া দেননি। আমরা আলোচনার তারিখ ঠিক করে সবাই বসেছিলাম। ভুক্তভোগী পরিবার সেখানে উপস্থিত হয়েছিল কিন্তু মোস্তফা কামাল বা তার কোন প্রতিনিধি আসেননাই। খবর নিয়ে জানা যায় মুস্তফা কামাল ভারই মারি উচ্চ বিদ্যালয় এর ক্রীড়া শিক্ষক পদে চাকরিরত আছেন। সেই সাথে বিএনপি এর রাজনীতির সাথেও জড়িত। সে রগচটা হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে নির্যাতন করে আসছেন। অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার মুঠোফোনে বলেন এই অভিযোগটি কার কাছে আছে আমি দেখে বলতে পারবো। এখন কোনও ব্যবস্থা নিবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি। এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।