// সঞ্জু রায়:
ভারতীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা- আইটেক দিবস-২০২৩ উপলক্ষে সংবর্ধনা ও পুনর্মিলনী উদযাপিত হয়েছে। যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন ও আইটেক অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-আইএএবি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এতে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভারত বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশ থেকে পাঁচ হাজার কর্মী আইটেক কর্মসূচির আওতায় অংশ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে, সেটা জেনে তিনি খুব আনন্দিত।
তিনি বলেন, ভারতে অনেক ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলো বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। সেখানে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী পড়তে যায়। পশ্চিমা দেশে পড়াশোনার খরচ অনেক। তবে ভারতে সেই খরচ অনেক কম। এতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা লাভবান হয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসে অনেক মিল রয়েছে। দুই দেশ এখন সম্পর্ক দারুণভাবে উপভোগ করছে। ভারতের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী একই বছরে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, এ বছর ৫৯তম আইটেক দিবস পালিত হচ্ছে। ভারত শুধু একা নয়, অংশীদার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়েও উন্নয়ন চায়। সে কারণে এই পর্যন্ত ১৬১ দেশের প্রতিনিধিরা আইটেকে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারতের বন্ধুপ্রতীম ও প্রতিবেশী দেশ। আমাদের সমৃদ্ধ ও উন্নয়ন একই সূত্রে গাথা। সে কারণেই বাংলাদেশের পাঁচ হাজার কর্মী আইটেক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে। তারা সেখানে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় করেছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও প্রত্যাশা করেন হাইকমিশনার।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানান ভারতীয় হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি রাজেন্দ্র সিং। এতে আইএএবির পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন আল নোমান, ফাতেমা তুজ জোহরা, ড. এস এম আসাদুজ্জামান, এলিজা চৌধুরী, ইকবাল হাসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ভারত সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম আইটেক ভারতের উন্নয়ন সহায়ক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ভারতের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সুবিধা প্রদান করছে। প্রতি বছর, কৃষি, হিসাব, নিরীক্ষা, সুশাসন অনুশীলন, ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, গ্রামীণ উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য, সংসদীয় বিষয়, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা, আইটি, ডেটা অ্যানালিটিক্স, রিমোট সেন্সিং, নবায়নযোগ্য শক্তি ইত্যাদির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রথম সারির ভারতীয় প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য আইটেক অংশীদার দেশসমূহকে ১০,০০০-এরও বেশি প্রশিক্ষণ স্লট দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত, ৫,০০০-এরও বেশি তরুণ বাংলাদেশি প্রফেশনালগণ আইটেক কর্মসূচিসমূহের অধীনে ভারতে এই ধরনের কোর্স করেছেন। এছাড়াও আইটেক সহযোগিতার অধীনে বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম মূল্যবান অংশীদার। ২০২০-২১ সালে কোভিড অতিমারি পরবর্তী সময়ে, বিশেষ ই-আইটেক-এর অধীনে ভার্চুয়ালভাবে বেশ কিছু কোর্সের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আইটেক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যক্তিবর্গের সামনে সেরা ভারতীয় অনুশীলনসমূহ তুলে সুযোগ প্রদান করে। ফলস্বরূপ, বিশেষত কৃষি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন খাতে অসাধারণ অগ্রগতি সাধনকারী বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারত সমানভাবে লাভবান হয়েছে।