আবদুর রহমান, সর্ষিনা:: ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরাইলের সাম্প্রতিক নির্বিচারে বোমা হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকার বাইতুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে আয়োজিত বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ, ইউনাইটেড ঢাকার ‘মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে’ প্রধান আতিথির ভাষণে বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও ছারছীনা দরবার শরীফের বড় ছাহেবজাদা হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন বলেন- ইহুদী চক্র এবং তাদের মিত্ররা ফিলিস্তিনে শতাব্দীকাল ব্যাপী আমার মুসলিম ভাইবোনদের হত্যা করছে, সম্পদ লুন্ঠন করছে, সম্ভ্রমহানী করছে, ঘরবাড়ী হতে উচ্ছেদ করছে, অহেতুক হয়রানী করছে, পবিত্র ভূমি বাইতুল মাকদাসে নামাজ আদায়ে বাঁধা দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন- মুসলিমগণ যখন তাদের হারানো অধিকার ও ভিটেমাটি ফিরে পেতে তৎপর তখনই তাদের উপর নেমে আসে অত্যাচার ও নিপীড়নের ষ্টীম রোলার। আর তথাকথিত শান্তি ও মানবতার ধ্বজাধারী বিশ^ মোড়ল খৃষ্ট চক্র নির্লজ্জ ভাবে ইহুদীদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে, যুদ্ধ বিমান পাঠিয়ে মুসলমান নিধনে সহায়তা করে এবং এভাবে কোন এলাকা দখল করে নেয়ার পর যুদ্ধ বিরতির আহবান জানিয়ে দখলদারিত্ব পাকাপোক্ত করে নেয়। অপরদিকে মধ্যপ্রাচ্যের যেকোন শান্তি প্রস্তাবে ভেটো প্রয়োগ করে ইসরাইলী দাবানলকে আরো প্রজ্জলিত করে বিশ্বে আশান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমার দাদাজান কেবলা হযরত মাওলানা শাহ্ আবু জা’ফর মোহাম্মাদ ছালেহ্ (রহঃ) ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘আল মুসলিমু মিল্লাতুন ওয়াহেদাহ্’। তাই এখন সময় এসেছে বৃহত্তম মুসলিম ঐক্য স্থাপনের মাধ্যমে ইসরাইলী দাবানলকে নির্বাপিত করার।
ইসলাম আমাদেরকে শান্তি ও সহাবস্থানের শিক্ষা দিয়েছে। আমরা শান্তিময় বিশ^ ব্যবস্থা কায়েম করতে চাই। আমাদের খলীফা আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওমর ফারক রা. ও সুলতান গাজী সালাহ্ উদ্দিন আইউবী (রহঃ) বাইতুল মাকদাস জয় করার পরও কোনরপ প্রতিশোধ গ্রহণ করেন নি। ইতিহাসের সে চরম সত্যকে স্মরণ করে ইসলাম ও মুসলামানদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা অমুসলিমদের কর্তব্য। তাই আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাবে ঘোষণা করতে চাই একমাত্র ইসলামই দিতে পারে বিশ^ শান্তির নিশ্চয়তা।
বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ্, ইউনাইটেড ঢাকার সভাপতি সাবেক জেলা ও দায়েরা জজ আলহাজ্জ ইসমাইল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ ঐতিহাসিক মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- নায়েবে আমীর মাওলানা নূরুর রহমান বেগ, নাযেমে আ’লা ড. মাওলানা সৈয়দ মুহা. শরাফত আলী, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদার্রেসীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, ঢাবির অধ্যাপক ড. হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আ.খ.ম. আবু বকর সিদ্দিক, অতিরিক্ত নাযেমে আ’লা মাওলানা মোঃ আলী আকবর, যুব ও ছাত্র হিযবুল্লাহর কেন্দ্রিয় সভাপতি প্রমূখ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন- ছারছীনা দলীয় রাজনীতিমুক্ত একটি হক দরবার। দেশ ও মুসলিম উম্মাহর যে কোন সংকটকালে এ দরবার অতীতেও ভূমিকা রেখেছে, এখনও রেখে যাচ্ছে। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক ফিলিস্তিন এবং এর আশপাশ পবিত্র ভূমির অন্তর্ভুক্ত। বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের প্রথম কিবলাহ। অতএব এই পবিত্র ভূমিকে কাফির-মুশরিকরা অবৈধভাবে দখল করে তাদের হীন স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
তিনি পীর ভাই, মুহিব্বিন ও বিশ্ব মুসলিমকে ফিলিস্তিনের জন্য বিশেষভাবে দোয়া করার ও সাধ্যমত সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
পরিশেষে মিলাদ ও দোয়ায় মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মানববন্ধন শেষ করা হয়।