এনামুল হক টগর
প্রিয় শেখ রাসেল।
তোমার আর আমার বয়সের মধ্যে অনেক মিল।
তোমার আর আমার স্বপ্ন বাসনা ও খেলার সাথে অনেক মিল।
তুমি যখন আঁকা বাঁকা পথ ধরে সাইকেল চালাতে দ্রুত ও ধীর গতিতে সরল,
আমিও তখন রাস্তায় রাস্তায় সাইকেল চালাতাম দূরে বহুদূরে স্মৃতি নির্মল।
একাত্তরে আমরা যুবক হলে দুজনই যুদ্ধে যেতাম স্বাদেশ স্বাধীনতা ও মুক্তির।
তোমার সাথে আমার জীবনের সম্পর্ক এক অবিচ্ছেদ্য দেশপ্রেমের আলোতে শান্তির।
তোমার বাবা ছিলেন মহৎ রাজনীতিবিদ দীপ্ত মানবতার চেতনায় দেশপ্রেমিক।
তিনি আরো ছিলেন এদেশের স্থপতি রূপকার মহামান্য রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতার মহানায়ক।
আমার বাবা ছিলেন ছোট চাকুরিজীবী সততায় মহৎ প্রাণ ও দেশপ্রেমে দীপ্তকর।
পাশাপাশি বাবা ছিলেন মৃত্তিকার মাঠে ফসল ফলানো এক দরিদ্র কৃষক শান্তির।
কখনো তিনি শ্রমজীবী কখনো তিনি কর্মজীবী কখনো তিনি আবাদের খামারে বিজ্ঞ বিবেক।
যে মানুষটি যুদ্ধের সময় স্বাধীনতার পক্ষে লড়েছিল আমরণ দেশপ্রেমের অবাক।
তোমার বাবার পবিত্র রক্তের সাথে এদেশের কৃষক ও শ্রমিকের রক্তের অনেক মিল!
এক মমতাময়ী নিগূঢ় সম্পর্ক ও বিপ্লবী জীবনের চেতনায় ভালোবাসার বিশ্বাস সরল।
তুমি হয়তো জানো তুমি ছিলে নগরের বুকে দূরন্ত কিশোর মাটির চেতনায় দৃঢ় দীপ্ত!
আমি ছিলাম গ্ৰাম বাংলার মেঠো পথে ক্ষুধার্ত বালক নিম্ন মধ্যবিত্ত শান্ত।
তোমার বাবা ছিলেন গ্ৰাম ও নগরের বুকে মানবতার দীপ্তিময় রাখাল রাজা সুন্দর।
তোমার পূর্বেপুরুষের সাথে আমার পূর্বপুরুষদের ছিল অনেক মিল চেতনার!
তুমি বেঁচে থাকালে আমরা একসাথে খেলতাম প্রয়োজনে ন্যায়পরায়ণ যুদ্ধ করতাম!
আগামী দিনের ক্ষুধামুক্তির সমাজ স্বনির্ভর সংস্কারে আমরা আঁধার ভেঙে আলো আনতাম।
তুমি বেঁচে থাকলে আর্দশ রাজনীতিবিদ হতে সময়ের দৃঢ় দুর্বার দক্ষ দিশারী।
প্রিয় বন্ধু মনে হয় তুমি এখনো জেগে আছো মাটির বুকে দেশপ্রেমে দীপ্তকর!
আমি কবি এখনো তোমার কথা লিখি বিপ্লবী জীবন সুষম বণ্টন দাবি অধিকার!
আমাদের সাহসী আন্দোলন আর নতুন শেকড়ের চেতনা দাউ দাউ শ্লোগান আগামীর।
অবিরাম অবিশ্রান্ত ভালোবাসায় বিপুল আলো ও নিরন্তর জ্ঞানের ভালোবাসা।
সবুজ সোনালী মাঠ পেরিয়ে কল কল ধ্বনিতে প্রবাহমান নদী চঞ্চল আশ্বাস।
অতন্দ্র মধুময় গ্ৰাম নগর ও তোমার ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো ইতিহাস।
অনির্বাণ শিখার মতো তোমার মহতী জীবনের আর্দশ কর্ম ও কল্যাণ বিশ্বাস।
মনে হয় জীবন্ত রাত্রির বুকে তুমি এখনো জেগে আছো জ্বল জ্বল নক্ষত্র দেশপ্রেমে উদ্ভাসিত।
আগামী দিনের সম্পদ বন্টন অধিকারে তোমার কর্মকৌশল নীতি উন্নত।
তুমি ফিরে আসলে এই বসন্তের সোনালী আভরণে ফুলগুলো প্রস্ফুটিত হতো জীবন্ত।
তোমার উত্তরসূরীরা জেগে উঠতো সভ্যতার উদ্যানে ফুল ও ফলে নব নব নবীন।
সদ্যজাত শিশুরা সময়ের পুষ্প উদ্যানে কোলাহল করতো মানবতার সূর্য সকাল সূচনা।
নতুনের সাথে তরুণ বিপ্লবী তুমি আর আমি হেঁটে যেতাম ন্যায়পরায়ণ মিছিলে প্রেম বন্ধন।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অভিজ্ঞ সংগ্ৰামী নেতা তুমি বাংলার আরেক মহানায়ক চেতনায় নন্দন।
তোমার কর্ম ছড়িয়ে যেতো লোকে লোকে দিকে দিকে আলোতে আলোতে জনম জনম পরিচয়।
তোমার প্রশাস্ত বুকের গভীরে ভালোবাসার অশ্রু ছায়া দিতো ক্ষুধার্ত মানুষগুলোকে প্রেমময়।
অথচ তুমি ফিরে এলে না তুমি ফিরে এলে না অনাগত স্বপ্ন আশাগুলো মলিন অসহায়।
তোমার শরীর থেকে ঝরে পড়া ফোঁটা ফোঁটা রক্ত এ মাটির সবুজে ইতিহাস হলো অক্ষয়।
তোমার জন্য কান্নায় ঝরে পড়লো শিমুল পলাশ শাপলা গোলাপ জুই চামেলি বকুল রক্তকবরী।
পাথরের বুকে নূড়ির বেদনায় সাগরের ঢেউগুলো কেঁদে উঠলো তীব্র ব্যথায়।
দূর দিগন্ত নীলিমার ধ্বনি প্রতিধ্বনি তোমাকে এখনো খোঁজে ফিরে বেদনাবিধুর।
তুমি ফিরে এসো তুমি ফিরে এসো বাংলার বুকে নতুন সূর্য সকাল জেগে উঠুক সংস্কার।