বর্তমান সময়ের শক্তিমান কবি খাজিনা খাজি’

// আজিম উল্যাহ হানিফ //
কবি খাজিনা খাজির জন্ম ও বেড়ে উঠা কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার মুগুজি গ্রামে। পড়াশুনা করেছেন কুমিল্লা শহরেই। বর্তমানে থাকেন ঢাকায়। লেখালেখির হাতে খড়ি হাইস্কুলে  পড়াকালীন। ইরাক-আমেরিকার যুদ্ধকে নিয়ে লিখেছেন ‘যুদ্ধ নয় শান্তির হোক পৃথিবী’ শিরোনামে একটি কবিতা। এরপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে পড়াকালীন সময়ে সাহিত্যমনা বেশ কিছু শিক্ষক ও সহপাঠীর সংস্পর্শ পান। নিয়মিত লিখতেন কলেজের ক্যাম্পাস বার্তা নামক পত্রিকা ছাড়াও বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও বুলেটিনে। সেই সাথে লেখা প্রকাশিত হত দৈনিক আমাদের কুমিল্লা, বাংলার আলোড়ন, সাপ্তাহিক রোববার, সময়ের দর্পণ, সাপ্তাহিক লাকসাম, আলোর দিশারী,সবুজপত্রসহ নানান পত্রিকায়।  কবি খাজিনা খাজির ২০২৩ বইমেলায় “দাহকালের কাব্য” নামে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। যা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। বইটি নতুন প্রজন্মের উঠতি বয়সের তরুণ তরুণীদের মাঝে বেশ সাড়া ফেলে।  সেই সাথে তিনি নিয়মিত লিখে চলছেন জাতীয় পত্রপত্রিকা, সংবাদ সাময়িকীতে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাহিত্য অনুষ্ঠানগুলোতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন আমন্ত্রিত মেহমান হিসেবে। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনেও উপস্থিত হচ্ছেন। তরুণ লেখক লেখিকাদের আইকন হিসেবে ধরা হয় তাকে। ব্যক্তিগত ইমেজ,লেখার ধরন, প্রেমের ও বিরহের মিশ্রণে লেখার ধারায় খুবই জনপ্রিয় একজন কবি হিসেবে ধরা হয় তাকে। তিনি তার লেখা ‘চিত্ত হারায় চিত্তে’ নামক কবিতায় লিখেছেন- জানি না কখন?/করে নিয়েছ আপন/ সুজনের ভীড়ে আমিও হয়েছি একজন/ হয়েছি আধার সুখ দু:খের পংক্তিমালার।/জানি না কখন?/ মন আমার জাগিয়েছ মনে/ চেয়ে রই অপলক ওই মনে/ ইচ্ছে জাগে মন আকাশ ছুঁতে। জানি না কখন? আরেকটি কবিতায় ‘প্রণয়ের প্রকাশ’ এ বলেছেন- প্রণয় তুমি ঝর্ণার মত/চিত্তের এই প্রবাহ স্বচ্ছ,/নির্মল হৃদয়ে পড়েছে তোমার ছায়া/হৃদয়ে দোলায়িত হচ্ছে তোমার চিন্তা।/মনের প্রতিবিম্ব তোমার ছবিটিকে বানী দিচ্ছে/প্রেমের এই বাণী নিত্যকালের।/ তোমার প্রণয়ে তাকে সার্থক কর/রূপ দাও চিরন্তন সত্যে। তরুণ যুগলদের কাছে জনপ্রিয় একটি কবিতা হলো ‘যদি স্পর্শ পায়’ এই কবিতায় লিখেছেন- ভালো নেই আমি/মনের আকাশে ভীষণ খরা/সব পুড়ে ছাই হবে এখুনি/যদি আলতো স্পর্শ পায় হাত/নামাব জোসনা ভরা বৃষ্টির রাত। সকল বয়সী মানুষের ভালোবাসা শব্দটিকে তিনি তুলে ধরেছেন ‘ভালোবাসার মানে’ কবিতায়- প্রথম প্রথম আমি যখন ভীতু ছিলাম/ অনুভব অনুভূতি প্রকাশে ভয় পেতাম/ তুমি বুঝিয়েছ প্রকাশ করতে হয় সব।/ যখন প্রকাশ করতে শুরু করলাম/ অবহেলায় অপেক্ষায় উপেক্ষায় বুঝিয়েছ/বড়র পীড়িত যে বালির বাঁধ।/ সারাক্ষণ মিস করে যেতাম তোমাকে যখন/ আমার সেই ক্ষুদে বার্তা এড়িয়ে গিয়ে/ বারবার বুঝিয়ে দিয়েছ এত মিস করতে নেই/আস্তে আস্তে মিস করি বলা কমিয়ে দিলাম। ‘ঝরা ফুলের হাসি’ নামক কবিতায় ঝুম বৃষ্টি রিনিঝিনি বৃষ্টির ছন্দে/কল্পনা বিলাসী মন আজ উদাসী/ উচাটন মন শান্ত বৃষ্টির জলধারায়।/দৃষ্টিবন্ধী বহমান পানির স্রোত/যেন বয়ে চলা গতিহীন নিরন্তর/  কোন এক অজানা অদৃশ্য পথে/চলতে চলতে চলছেই ভ্রমণ পিয়া/থেকে থেকে কোথাও খর কোথাও মন্থর। ‘দেখা হবে আবার’ নামক কবিতায়-ভেবেছিলাম অপেক্ষার পালা শেষ/সবুজ ঘাসের নরম মেঠোপথে/বন্ধু আমার আসবে ফিরে/ভালোবাসার বেলাভূমি সাজায়ে/আমি রয়েছি তরীতে একা।/ঘোর অমানিশার তমসা কেটে/পেয়েছি এক দ্যুতি ছড়ানো স্বপ্ন সকাল/এসে গেছে ফেরার সোনালি ডাক/পেয়ে গেছি যেন আলোক প্রহর/দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর হবে/আমাদের দেখা আবার।/মহাকালের অপেক্ষার যাত্রায়/সময় ফুরায় দিন হারায় সপ্তাহ বিলীন/মাস শেষে মাস আসে বিরামহীন।  ‘অন্তর প্রেরণা’ নামক কবিতায়- দু:খ বা শোক আমার শক্তিরূপ/আপাত ব্যর্থতাও পায়ে দলি/প্রেরণা পাই নতুন সাফল্যে।/সুদৃঢ় হই নব্য প্রত্যয়ে/পরাজয়ে ডরি না আমি/নেতৃত্বে এগিয়ে যাই লক্ষ্যে/রূদ্ধ দ্বার খোলে নব্য নতুনরুপে।/মৌনতায় ডুবিয়ে দেই দেহমন/প্রবেশ করি চিন্তার উৎসমূলে/উৎসারিত হয় চিন্তার তরঙ্গ/নতুন চিন্তা তরঙ্গ সুনামির মতই/সংকীর্ণ আচরণ অভ্যাস জঞ্জাল ভাসায়।/মুক্ত চিন্তাধারায়,মুক্ত বিশ্বাসে/উন্মোচন করে মানবিকতার/চিত্ত হয় একাত্ব প্রতিটি পদক্ষেপে/কাজে ভাসাই মনের ভেলা/কাজই আনন্দের ফল্গুধারা।/আত্মবিকাশ ঘটে হৃদয়ে/শৃঙ্খলে নেই আছি মুুক্তিতে/ভ্রান্তদৃষ্টির সংকট কাটিয়ে চলি/ঠিক দৃষ্টির নতুন সম্ভাবনায়।‘বহুদিন দেখা নাই’ বহুদিন কন্ঠ শুনি না তার/চেতনার গভীরে প্রোথিত নিপুন মুখ/সর্বত্র যার বিচরণে সুখ/অনুভবের শিহরণে জাগে তোলপার/হৃদপিন্ড ছাড়িয়ে অস্থিতে অস্থিতে কম্পমান।/বহুদিন দেখা নাই তার/অবচেতন মনে কল্পিত হয় বার বার/এই কল্পচিত্র দিয়ে যায়/অযাচিত বেদনা সমান/খুঁটি হয়ে জেগে রয় বক্ষে অটল।/মনের কোণে নানা রঙের মেঘের ভেলা/এধার থেকে ওধার খেলে যায় সারাবেলা। ‘ভেবে দেখার সময় কি আছে?’ নামক কবিতায়-ইচ্ছের পাখিরা আজ উদাস/দূর আকাশে যার দৃষ্টির বাস/সাদামেঘেরা খেলছে বিশাল/বাতাস ছাড়িয়ে নেয় দূর থেকে দূরপ্রান্তে/চক্ষু পলক আমার এক প্রান্তেই।/আগুন ঝরা রোদ এই শ্রাবণে/প্রকৃতি স্মরণ করিয়ে দেয় কঠোরতা/হারিয়ে হারিয়ে ভাসে প্রিয় অবয়ব/থেমে থেমে বেজে উঠে প্রিয় সুর/পুরাতন প্রেম খুঁজছে নিরব সুখ।/অনেকটা সময় পেরিয়ে/ভাবছি একা এক মনে/ভেবে দেখার সময় কি আছে?/বিষাদের আড়ালে পিষ্ট পুরাতন প্রেম/মাঠের সোনালি ফসলের মত/আবারও কি প্রেম হাসবে?/‘দূর হতেই ডাকি’ নামক কবিতায়-দূর হতেই ডাকি-শুনছো কি তুমি?/আমি সেই তারাভরা রাত্রি/অপলক চেয়ে চেয়ে দেখা/ভীষণ আনমনা আঁখি।/দূর হতেই ডাকি-শুনছো কি তুমি?/আমি সেই অভিমান/অপেক্ষার প্রহর গুনে গুনে/আজ বড্ড নিরিবিলি/জমানো না বলা কথার পাহাড়। ‘মনে পড়ে খুব’ কবিতায়- মহাকালে বয়ে চলা যাত্রীর অপেক্ষায়/ সময় পুরায় করুন ব্যঞ্জনায়/ গ্রিনিচ সময়ের সাথে যুক্ত হয় সময়/চিহৃ রয় মেঠোপথ ঘাট ইটপাথরের গায়ে।/কিছু স্মৃতি নিরবে নিভৃতে ভাসায়/অচেনা এই শহরে চলছি একা/যেতে যেতে পথ পথিককে ভাবায়/অদৃশ্য বলয়ে আমি বন্দি/অসমাপ্ত রঙিন স্বপ্নের বৃত্তে/যাতনার স্পর্শে এই চিত্ত হারায়।/স্মৃতিরা জীবন্ত হয়ে কল্পনায় ফিরে/পেছনে ফেলে আসা সময়ে,/মনে পড়ে আজ খুব তার কথা/মনে পড়ে গহীন সমুদ্রের পাড়/ভেজা বালুচরে পদচিহৃ আঁকা/ নোনাজলের ঝাপটায় পদচিহৃ/মুছে যেতে দেখা অতল সমুদ্রে।/মনে পড়ে গহন বনের পাশ ধরে/ছুটে চলা বাসের ধাবমান গতির কথা/কথার ফুলঝুড়িতে এ পথ ফেলে আসা।/কন্টকাকীর্ণ এ পথ আজ/বলে যায় পেছনে হারানো সময়ের আলাপ/আমি তো শান্তি পিয়াসী/এসেছি শান্তির শপথ নিয়ে/ এমন অনেকেই নি:স্বার্থ ভালোবাসে/মন কুঠরে দু:খ লুকিয়ে হাসে/দু:খের ভার বয়ে নিরবে ভাসে/কারণ সে হয়তো জেনে গেছে/এই স্বপ্ন স্কেচ কপিরাইটের সমাপ্ত নেই।/‘সাধ্যহীন সাধ’আমাদের প্রেম ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন/দূরগগন পাড়ের উড়ন্ত মেঘের মত/সোনালী রূপালি আভায় রাঙিয়ে/জেগে আছে প্রেম অনন্ত।/বৃষ্টির কাছে আর্জি ভিজিয়ে দাও/তাপিত হৃদয় সিক্ত কর/ধুঁয়ে নাও সমস্ত তাপ/ভাসাও বুকের আছে যত বিষাদ। বিশ্বাস জাগে প্রাণে নামক কবিতায়-বর্তমান সমাজটা ব্যস্ত পরিবর্তনে/চকচকে আসবাবে যে করে বাস/নেই সেই দিকে তাকাবার কোন প্রয়াস/এটাই গুনে ধরা সভ্য সমাজ।/চারদিকে আলোক ঝলক/আগুন করে যাচ্ছে যেন গ্রাস/তবুও আলো দেখি না অনেকদিন।/সমাজে আজ বিলীন মাতৃভক্তি/ছোট্ট শিশুটিও খোঁজে না মায়ের আঁচল/আসক্ত ফ্রি ফায়ার মোবাইল গেইমে।/প্রেমিক প্রেমের অর্ঘ্য দিতে ভুলেছে/প্রেমিক চরিত্র ভন্ড- প্রতারক/কোথায় লুকাবে কোথায় হারাবে/পালাবার পথ খুঁজে সারাক্ষণ/প্রেমিকার ঠোঁটে বাড়িয়েছে চুমুর ঋণ/যার শ্বাস বাঁচে পালাতে পারলেই যাবে দিন।/নষ্ট সময় এসে গেছে/মুড়িয়ে কুয়াশার চাদর/প্রণয় দীর্ঘশ্বাসে হালকা হয়/যেখানে দারিদ্র্য করে যায় উপহাস।‘প্রশ্ন কর না’ নামক কবিতায়-আমি স্বচ্ছ জলে নগ্ন হতে পারি নি/লজ্জার আভরণে ঢেকেছি তনু/তাতে কি?/কিন্তু শুদ্ধ প্রণয় তো দিতে পেরেছি।/পান করেছি প্রেমের হেমেলক/ভয় পাইনি,মনে পেয়েছি প্রশান্তি।/আমি জানি সভ্যতার সবই মেকি/কিছু চিরন্তন সত্য ছাড়া/প্রেমের স্বর্গে তাই ভেসেছি/কখনও প্রশ্ন কর না তুমি আমায়/এভাবে কেন সাজাই প্রেমতরী একাই?/দেখো! এই মনের গহীনে আছে/তোমাকে উন্মুক্ত প্রেম বিলানোর স্বাদ/পরাধীন নও তুমি আমার প্রেম রাজ্যে/শেকলে বেঁধে দিব না আঘাত।/প্রকৃতির কাছে যাও-/নির্মল বাতাস বয় নিরন্তর/ হাত ভেজাও বৃষ্টির জলে/কত!শীলতা দেয় তনুমনে/সমুদ্রে ভাসাও তরী উর্মীর খেলায়/পাহাড় স্তরে স্তরে রয়েছে কেমন সাজান/দূর-দূরান্তে দৃষ্টিকে কর প্রসার/কোথাও পাবে না তুমি জঞ্জাল/প্রকৃতির মতই প্রেম আমার নির্ভেজাল।/আমি কবিতার পেয়ালায় ডুবে মরি/পাই সুখ ছন্দে ডুবে বারবার/ তুমিও পাবে যদি ঠোঁট ডোবাও কবির কবিতায়।/তুমি আমার মতই-/একমাত্রিক জীবনকে বয়ে বেড়াও/বহুমাত্রিক সমস্যার আঘাত সয়ে নাও/তবুও পাও না সাহস দ্বিমাত্রিক হবার/কখনও প্রশ্ন কর না তুমি আমায়/আমি কেন একা একা প্রেমতরী সাজাই?/‘মায়াবৃত্ত’ নামক কবিতায়-একটা বৃত্তে আটকে আছে চিত্ত/বৃত্তের নাম অদ্ভূত মায়াবৃত্ত/পরিধি,জ্যা,ব্যাস, ব্যাসার্ধ/যা যা থাকে একটা বৃত্তে/সব কটি রয়েছে মায়াবৃত্তে।/মায়াবৃত্তের পরিধি বেশ শক্তপোক্ত/ভেদ করে বের হওয়া যে দুর্সাধ্য/ মায়াবৃত্তের মায়াজালে চিত্তের রোদন চলে/মায়াবৃত্ত ভেদ করে বের হতে পারলে/রোদন ঢেউ মিলিয়ে যাবে অকপটে/চিত্ত পাবে স্বাধীনতার সুখ।/‘অধরা স্বপ’ কবিতায়-কিছু স্বপ্ন থাকে, স্বপ্নের মতই/হৃৎ  মাঝে দানা বাঁধে বেসামাল/হয়তো কখনও হবে না-/চন্দ্রিলা রাতের তারা দেখা/ছাদের কোণে বাঁশবাগানের ফাঁকে/অবাক জোসনা বিলাস করা/শীতল রুপালি মায়ায় ভিজে যাওয়ার/মোহ প্রেমের না বলা কথা।/হেমন্তের বিষন্ন বিকেলে/প্রেমিক মন হারিয়ে ফেলে ভাষা/আনন্দ বেদনাগুলো লুকিয়ে বৃক্ষে/বিষাদের আবরণে আচ্ছন্ন করে মন/হয়তো কখনও হবে না-/সবুজের মায়া ঘেরা মাঠে শুভ্রতার খেলা দেখা/কাশধারে একাকী বিষন্ন মনকে হারিয়ে/ফুলের নরম ছোয়াঁয় দু:খ মুছে ফেলা।/কিছু চাওয়া থেকে যায় চাওয়ার মতই/অনেক অব্যক্ত কথার অচলের মতই/বয়ে যাবে হিসেবের বাকির খাতায়। ‘জীবন রঙের খেলা’ কবিতায়-বেলা শেষে ক্লান্তির রেশ কাটাতে/বিছানায় যখন মাথা এলিয়ে দিলাম/পশ্চিমের জানলায় সোনা রোদ হাসে/সোনালি আভায় চনমনে হয় চিত্ত/দক্ষিণা বাতাস জানান দেয় স্বস্তির/রোদের দাহ্য তেজ ম্লান হয়েছে কিছুটা/এসে গেছে গোধূলির সাজের মায়ায় নিবন্ধ মন/কত! শৈল্পিকতা এই সাজে!/সময় গড়ায় পাখিরা নীড়ে ফিরে/কুহুতানে সব হারিয়ে মায় অন্ধকারে/রঙেরা সব ক্ষয়ে ক্ষয়ে বিলীন/দিগন্ত রেখার অস্তগামী সূর্যের সাথেই/কল্পনায় ভেসে যাই ভাবনার জগতে/এভাবে আর কত বেলা হারাবে?/চেয়ে চেয়ে ওই মায়ার জালে/আঁকতে স্বপ্নের ঐন্দ্রজালিক রেখা/ছলছল লোচন টলমল সলিল/ঝলমল রুপালি উর্মির মেলায়/স্বপ্নগুলো দোল খেলে যায়।/আর কত অসহায় হবে স্বপ্নগুলো?/কত স্বপ্নের মৃত্যু হবে প্রতিদিন?/সোনালী সূর্য কি স্থায়ী হবে এই জীবনে?/মায়া বেলা যতটা সময় ধরে চলে/দিগন্তের রেখা যেন আবিরের থাল/আকাশ কত রঙে যে রাঙে!/যেন একটা জীবন এবং জীবনের তরে/এমন রঙের সাজ খেলে।
খাজিনা খাজির কবিতাগুলোর প্রথমাংশ কিংবা পুরোটা পড়লে আমরা নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে পারি। নিজেদের নতুন করে সাজানোর চেষ্টা করতে থাকি। নতুনের জয়গান গাইতে পারি। কবি আমাদের জীবনের নানান পরতে পরতে কি হতে যাচ্ছে, কি হবে,তা নিপুন কলমের তুলিতে কল্পনা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ছোট বেলায় বাবাকে, কয়েক বছর আগে বড় ভাইকে হারিয়ে ও জীবনের ধাপে ধাপে বাস্তবতাকে পুঁজি করে অজানা ভবিষ্যতের দিকে হাঁটা কবি-কল্পনা দিয়ে সত্য ঘটনাগুলোকে লিখে চলেছেন অজস্র লেখা ও কবিতায়। যাতে আমরা নতুনত্বের ছোঁয়া খুঁজে পাই।
কবি খাজিনা খাজি আমার প্রিয় কবি,ভালোলাগার কবি,ভালোবাসার কবি, চির প্রেমের কবি। দীর্ঘ ১১ বছরের পরিচয় থাকা এই কবি আমার বড় বোন কিংবা বন্ধু সমতুল্য। কথা বললে কিংবা কোন সুখবর শুনলে হাসির ঝিলিক চলে আসে মনে। সেই কবিকে শুভেচ্ছা সব সময়। বাংলা সাহিত্য ভান্ডার তার হাত ধরেই উর্বর হবে বলে বিশ্বাস রাখি। 

লেখক: আজিম উল্যাহ হানিফ, কবি ও কলামিস্ট। ০১৮৩৪-৩৮৯৮৭১