// ফরিদপুর প্রতিনিধি
আজ ফরিদপুর জেলার মানুষের জন্য একটি শুভ সুন্দর মাহেন্দ্রক্ষণ। আজ বাংগালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি বিশেষ রেলযোগে ভাঙ্গায় আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমুখী রাজনীতির ধারাবাহিকতায় তিনি ভাঙ্গা উপজেলার বামনকান্দা এলাকায় রেলজংশন উদ্বোধন করবেন।
দুপুরে ভাঙ্গা পৌরসভার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়াম মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সরকারের উন্নয়নমূলক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙ্গায় আসছেন খবরটি চলতি মাসের শুরু থেকে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের বেশ উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভাঙ্গায় আগমন নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্ট্যাটাস থেকে প্রধানমন্ত্রীর শুভাগমণ নিয়ে এক উচ্ছ্বাসের জোয়ার বয়ে উঠে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের মধ্যে দিয়ে ফের আওয়ামীলীগ সরকার গঠনের পর ফরিদপুর জেলায় এটাই প্রথম কোন জনসভা প্রধানমন্ত্রীর। যে জনসভা ঘিরে দলীয় ফোরাম থেকে শুরু করে বৃহত্তর ফরিদপুরের আওয়ামীলীগ পরিবারগুলোর কাছে এক ভিন্ন মাত্রা বহন করছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ রাজনৈতিক মহল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমাগত। প্রধানমন্ত্রীর ভাঙ্গার জনসভা ঘিরে স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নতুন এক উদ্দীপনা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন নৌকার কাণ্ডারিরা। কারন হিসেবে ভাঙ্গায় একদিকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লা ও ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি। দুজনের রাজনীতির চেতনা এক হলেও প্রধানমন্ত্রীর সফর ও জনসভায় নিজেদের কর্মী ও সমর্থক নিয়ে মাঠে উপস্থিত বিষয়ে দুই নেতা যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে কাজ করছেন। দুজনের টার্গেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে এক জন সুমুদ্রে পরিণীত করতে হবে।
ভাঙ্গার জনসভার থেকে সারাদেশের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নৌকা তথা আওয়ামীলীগের জোয়ারের কাছে অন্য সকল খড়কুটো হয়ে ভেসে যাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। তাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সারাদেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়নের জোয়ার বহিয়েছে তারই অংশ হিসেবে ফরিদপুর তথা দক্ষিণপশ্চিমা অঞ্চলের অন্যতম হচ্ছে রেল সংযোগ উন্নয়ন। ভাঙ্গার রেল জংশন উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থেকে জাতীয় নির্ববাচনের ঢেউ সারাদেশের ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন আওয়ামীলীগের অভিজ্ঞ মহল। জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের একাধীক নেতাকর্মীদের তথ্য মতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে। ভাঙ্গা স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ধারণ ক্ষমতা পুরনের পরেও বাহিরে হাজার হাজার জনতার উপস্থিতি ঘটবে। কারন তাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কথা শুনার জন্য বৃহত্তর ফরিদপুরের সকল জেলা ও উপজেলাগুলো থেকে জনসভা এলাকায় মানুষ ছুটে আসবেন। তাদের জন্য জনসভার বক্তব্যে শ্রবণের জন্য শহরের সকল প্রান্তে মাইকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা আওয়ামীলীগের নেত্রীবৃন্দ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে গত এক সপ্তাহ ধরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের প্রস্তুতি সভা, প্রচারণা, মিছিল ও লিফলেট বিতরণ অব্যাহত ছিল। জনসভাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সকল ইউনিটের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টির পাশাপাশি প্রেসিডিয়াম কাজী জাফর উল্লার নেতৃতে বিশেষ বর্ধিত সভাসহ জনসভা সফল করতে অগ্রণী ভূমিকা ছিল সবার কাছে দৃশ্যনীয়। পাশাপাশি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর ও সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি ও তার সকল নেতাকর্মীরা সকল প্রকার প্রচার ও প্রচারণা চালিয়েছেন।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ জানান, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দিনরাত জনসভা সফল করতে নিরলস কাজ করেছি। আমাদের লক্ষ্য জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটানো।
স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় সুত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফর সঙ্গী হিসেবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনসহ মন্ত্রী পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য ঢাকা থেকে ভাঙ্গার বগাই রেল জংশনের শুভ উদ্বোধন করবেন। পরে ভাঙ্গা পৌরসভার ডাঃ কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়াম জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দিবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোটা শহর এলাকায় নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে নিরাপত্তা বাহীনির সদস্যরা। ভাঙ্গা রেল জংশনের সৌন্দর্যকরণ ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল এর মঞ্চ প্রস্তুতসহ সকল আয়োজন সুসম্পন্ন করেছে প্রশাসন।
জেলা আওয়ামীলীগ, উপজেলা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে সুদৃশ্য তোরণ নির্মাণ করার পাশাপাশি ব্যানার ও ফেস্টুনে রাস্তা ও বাসাবাড়ির গাছপালায় ছেয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু পরিবারের ছবি সম্বলিত সুদৃশ্যয়ানে। এযেন এক নতুন সাঁজে সাজানো হয়েছে ভাঙ্গা শহরকে। জনসভায় উপস্থিত জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফরিদপুরে পাবলিক বিশ্ব বিদ্যালয় ও ভাঙ্গায় ট্রমা সেন্টারের একটি দাবী নিয়ে তারা উপস্থিত হচ্ছেন বলে অভিমত সাধারণ নেতাকর্মীদের। তবে তারা বলছেন মঞ্চ প্রস্তুত। এখন প্রধানমন্ত্রীর আগমনের অপেক্ষার পালা গুনছে ফরিদপুরসহ বৃহত্তর ফরিদপুরবাসী।