সঞ্জু রায়:
ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য সংযোগ বাড়াতে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ঢাকায় সাইবার মৈত্রী ২০২৩ এর সমাপনী অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ এই অধিবেশনের আয়োজন করে। এসময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।
অধিবেশনে প্রণয় ভার্মা বলেন, ডিজিটাল কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি করা, উভয় দেশই স্টার্টআপ এক্সচেঞ্জ, ভারত-বাংলাদেশ স্টার্টআপ ব্রিজ চালুকরণ, বাংলাদেশে ১২টি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠা, ফিন-টেকসহ অন্যান্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সরলীকরণ এবং একীভূতকরণের মতো বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছে এই দুই দেশ।
তিনি আরও বলেন, সাইবার-মৈত্রী হলো ভারত ও বাংলাদেশের সেক্টর বিশেষজ্ঞবৃন্দ ও প্রফেশনালগণের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম এবং ইন্টারফেস। যার লক্ষ্য সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের জন্য সহযোগিতা প্রদান করা।
২০২২ সালের এপ্রিলে ভারত ও বাংলাদেশ ই-গভর্ন্যান্স, এম-গভর্ন্যান্স, ই-পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি, গবেষণা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবন, স্টার্ট-আপসমূহের বিকাশ, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সেরা অনুশীলনসমূহ বিনিময় করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্সবিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এই দুই দেশ সাইবার-আক্রমণ ও সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক ঘটনাবলি, সাইবার নিরাপত্তা প্রযুক্তি-সংক্রান্ত সহযোগিতা, সাইবার নিরাপত্তা নীতি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের বিষয়েও একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই তাদের অর্থনীতি, সমাজ ও শাসনব্যবস্থার বৃহত্তর ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উভয় দেশের তরুণ ও উচ্চাকাঙ্খী জনগণ তাদের সকল কর্মকাণ্ডের জন্য ডিজিটাল স্পেস ব্যবহারের ব্যাপারে ক্রমবর্ধমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাইবার-মৈত্রী ২০২৩ জ্ঞানের আদান-প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সাইবার স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করা, নেটওয়ার্কজনিত দুর্বলতাসমূহ চিহ্নিত করা ও মোকাবিলা করা। সাইবার ঝুঁকি মূল্যায়নের প্রস্তুতি এবং সামগ্রিকভাবে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক।
হাই কমিশনার বলেন, এই সকল বিষয়ই উভয় দেশের সেক্টর বিশেষজ্ঞদেরকে ডিজিটাল স্পেস রক্ষা করতে এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানুষে-মানুষে সম্পৃক্ততা বাড়াতে ডিজিটাল প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহারকে আরও কার্যকর করে তুলতে সহায়তা করবে। সাইবার-মৈত্রী ২০২৩-এর মতো এই যৌথ সহযোগিতামূলক অনুশীলনসমূহ ভারত ও বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞগণকে সাইবার নিরাপত্তা, এআই, আইসিটি ও আইটিবিষয়ক মানবসম্পদ উন্নয়নের মতো বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সমস্যা মোকাবিলা করতে সক্ষম করেছে। এই বিষয়গুলো ডিজিটাল কানেক্টিভিটি অর্জন এবং উভয় দেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ আকাঙ্খা পূরণের জন্য অবিচ্ছেদ্য।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক হাই কমিশনার ও ভারতের কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সিইআরটি-ইন)-এর সফররত প্রতিনিধি দলকে তাদের মূল্যবান অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বাংলাদেশি অংশীজনদের সাথে বিনিময় করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞবৃন্দ, ডিজিটাল ফরেনসিক বিজ্ঞানীগণ, আইটি প্রফেশনালগণ, শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণার্থী ও অন্যান্য অংশীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।