আদমদীঘি মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজেরশিক্ষক নিয়োগে সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ


আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি সদরে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি আবির উদ্দিন খান ও অধ্যক্ষ শেখ সাদীর বিরুদ্ধে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি কিনা এবং শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার কথা বলে এ টাকা নেওয়া হয়। ভুক্তভোগী এক শিক্ষকের অভিভাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছালাম উপজেলা নির্বাহি অফিসারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলা সদরে ভাড়া বাসায় ২০১৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। আদমদীঘি সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া সত্বেও শেখ সাদী অধ্যক্ষ এবং প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে আবির উদ্দিন খান দায়িত্ব পালন করেন। তারা যৌথ ভাবে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২৫জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেন। তিন মাসের মধ্যে এমপিওভুক্ত করার কথা বলে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক কর্মচারীদের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করেন। প্রতিষ্ঠানটি ৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও অদ্যবধি এমপিওভুক্ত হয়নি। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন জায়গা জমি না কেনায় সরকারি রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়নি। ফলে শিক্ষক কর্মচারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। অভিযোগকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছালামের ছেলে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক আকতারুজ্জামান, মেয়ে শামিমা নাসরিন ও ভাতিজা জাহিদ হাসানের নিকট থেকে চাকুরী এমপিওভুক্ত করা ও প্রতিষ্ঠানের নামে জমি বাবদ সভাপতি আবির উদ্দিন খান ও অধ্যক্ষ শেখ সাদী বিভিন্ন সময় মোট ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা তহির উদ্দিন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু রায়হান জানান, সভাপতি ও অধ্যক্ষ শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার সময় ডনিশনের নামে লাখ লাখ টাকা গ্রহন করলেও অদ্যবদি প্রতিষ্ঠানের নামে কোন জায়গা ক্রয় কিংবা শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি অভিভাবকহিন হয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে শ্রেনি পাঠদান চলছে। ইতিমধ্যে অনেক ছাত্রছাত্রীরা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে। সাবেক কমান্ডার আব্দুল হামিদ জানায়, ৫ বছরেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায প্রতিষ্ঠানটি অভিভাবকহিন হয়ে এখন ধংসের দ্বারপ্রাপ্তে পৌঁছেছে। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাবিল উদ্দিন জানান, সভাপতি ও অধ্যক্ষ শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ডনিশনের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন আর প্রতিষ্ঠানে নজর দেননা।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শেখ সাদী শিক্ষকদের নিকট থেকে টাকা গ্রহনের কথা স্বীকার করে জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে অত্র প্রতিষ্ঠানের জমি ক্রয় করা হবে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবির উদ্দিন জানান, অভিযোগকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছালামের নিকট থেকে ৩ লাখ টাকা গ্রহন করা হয়েছে। তবে আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় করে প্রতিষ্ঠান সচল করা হবে।
আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহি অফিসার টুকটুক তালুকদার এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া নিশ্চিত করে বলেন, সরজমিনে তদন্ত করে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।