গো-খাদ্যের অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা আগৈলঝাড়ার খামারীরা

// অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারীরা। খাদ্যের এই দাম না কমলে বড় ধরণের লোকসানের মুখে পড়তে হবে তাদের। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আগৈলঝাড়া উপজেলায় বিপুলসংখ্যক গরু, ছাগল মোটাতাজা করছেন খামারীরা। কিন্তু দিন যতই এগিয়ে আসছে গো-খাদ্যের দাম ততই বেড়ে চলছে। এতে খামারীদের খরচ বেড়ে গেছে। দফায় দফয়া গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পরেছেন উপজেলার বেশির ভাগ খামারিরা। কয়েক মাস আগে যে গমের ভুষি ২ হাজার টাকা ছিল তা বেড়ে এখন ৩হাজার কিনতে হচ্ছে। একারণে অনেকে পরিমাণমত খাদ্যের যোগান দিতে না পেরে গবাদি পশুর খাবার কমিয়ে দিয়েছেন। আর গো-খাদ্যের দাম বাড়ার পেছনে আমদানিকারক ও মিলারদের কারসাজি এবং সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবকে দায়ী করছেন তারা।
একটি খামারের দায়িত্বে থাকা মো. শামীম বলেন, এখন আর গরু পালনের কোন সুযোগ নেই। গত ছয়মাস আগে যে গমের ভুষি কিনেছি ২ হাজার টাকায়, এখন তা কিনতে হচ্ছে ৩ হাজার ৩শ’ টাকায়। আগে যে ভুট্টার গুড়া কিনেছি ১ হাজার ৮০০ টাকায় এখন তা নিতে হচ্ছে ২ হাজার ৫শ’ টাকায়। ৪০ কেজির মুগের ভুষি আগে ২ হাজার ৮শ’ টাকায় কিনলেও এখন কিনতে হচ্ছে ৩ হাজার ২শ’ টাকায়। দানাদার খাবারের বাজার টানা উর্ধমুখী থাকায় অনেকেই খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে আবার গরু বিক্রি করে খামার ছোট করছেন। বাজার তেমন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পরেছে তেমন কোথাও কোনো তদারকি কিংবা মনিটরিং নেই। হঠাৎ করেই দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমাদের শতশত খামারীকে পথে বসতে হবে বলে জানান খামারীরা। গৈলা বাজারের গো-খাদ্য বিক্রেতা খালেক বেপারী জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অজুহাতে যখন গমের দাম বাড়লো সেই থেকে গমের ভুষির দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেল। এছাড়া যখনই সয়াবিন তেলের দাম বাড়লো সেই সময় থেকে সয়াবিনের ভুষির দামও বাড়ানো হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান তরফদার সাংবাদিকদের বলেন, সারাবিশ্বেই খাবারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কিভাবে খামারীদের টিকিয়ে রাখা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। এজন্য খামারীদের উন্নত জাতের ঘাস চাষের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সরকার একটি প্রকল্পের মাধ্যমে খামারীদের ঘাস চাষে সহযোগিতাও করবে। পাশাপাশি যেসব খামারি আগামী কোরবানি উপলক্ষে গরু মোটাতাজা করছেন তাদের জন্য ইউরিয়ার মোলাসেস তৈরির পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।