বগুড়ায় নিরাপদ সবজি ও কৃষিজাতপণ্য বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন

// সঞ্জু রায়, বগুড়াঃ জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে সমন্বিত বালাই দমন পদ্ধতি অবলম্বন করে জৈব সার প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে বগুড়ায় যাত্রা শুরু করলো নিরাপদ সবজি ও কৃষিজাত
পণ্য বিক্রয় কেন্দ্র। পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইউপি) সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বুধবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদের বাহিরে আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষকের বাজার নামে এই বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক। পিইউপির প্রধান সমন্বয়কারী শেখ মোঃ আবু হাসানাত সাঈদের ব্যবস্থাপনায় ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক করতোয়ার বার্তা প্রদীপ ভট্টাচার্য্য শংকর, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ডালিয়া নাসরিন রিক্তা, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসমত জাহান, জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ রাসেল, কৃষি বিপনন কর্মকর্তা আবু সালেহ মোঃ হাসান সারোয়ার, এমসিসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর গ্রেগরি ভ্যান্ডারবিল্ট, শাখারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক রুমি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রোপের নির্বাহী পরিচালক তাহমিনা পারভীন শ্যামলী, নিলুফা ইয়াসমিন প্রমুখ। পিইউপি’র কর্মসূচি সমন্বয়কারী শেখ আবু রাহাত মো: মাসরুকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে ইতিবাচক আগামীর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে বগুড়ার কৃষকেরা। উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি হলেও জমিতে কমছে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার যাতে দীর্ঘমেয়াদী রোগবালাই থেকে মুক্তি পাবে সাধারণ ভোক্তারাও। কৃষকের নিজেদের বাড়িতে উৎপাদিত ভার্মি ও ট্রাইকো কমপোস্ট ব্যবহার করে কৃষকেরা উৎপাদন করছেন পটল, করোলা, লাউ, চালকুমড়া, ঢেঁড়স, ঝিঙ্গে, বেগুন, কচুর লতিসহ নানা প্রকারের সবজি। আর জমিতে কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে বাঁচতে ক্ষতিকারক নানা কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে কৃষকেরা আজ ব্যবহার করছে ফেরোমন ফাঁদ, আঁঠালো ফাঁদ ও হাতে দমন পদ্ধতিসহ সমন্বিত বালাই দমন নানা প্রাকৃতিক উপায় যাতে করে সুফল পেয়েছে তৃণমূলের কৃষকেরা আর যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ পাচ্ছে বিষমুক্ত সবজি ও কৃষিপণ্য। আর তাই কৃষকের এই ইতিবাচক যাত্রাকে এগিয়ে নিতে ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন সুপার শপ ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করা হচ্ছে শুধু তাই নয় জমি থেকে সরাসরি যেন ক্রেতারা পণ্য কিনতে পারে সেই লক্ষ্যেও যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দেন উপজেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সাল থেকে এমসিসি বাংলাদেশের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় বগুড়ায় শাখারিয়া গ্রামে ‘পরিবেশ বান্ধব কৃষি ও এর ব্যবসায়িক গুরুত্ব’ প্রতিপাদ্যতে নিরাপদ কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ নিশ্চিতে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে আসছে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প। জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষায় নিরাপদ খাদ্য যখন আজ সময়ের দাবি তখন তা বাস্তবায়নে তৃণমূলে গুরুত্ব দিয়েছে বর্তমানের সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোও সেখানে বগুড়া সদরের শাখারিয়া গ্রামের কৃষকেরা হতে পারে অনুকরণীয়। কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জমিতে জৈব সারের প্রয়োগের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের এই ইতিবাচক সূচনা ছড়িয়ে যাক বগুড়া থেকে দেশের সর্বত্রই এমনটিই প্রত্যাশা সকলের।