অক্টোবরের আগেই রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি আসার সম্ভাবনা

// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের পরমাণু জ্বালানী (ইউরেনিয়াম) উৎপাদন প্রস্তুতির সনদ বৃহস্পতিবার ( ৪ মে) রাশিয়ায় স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ভিত্তিতে রাশিয়ার পরমাণু জ্বালানী কারখানায় রূপপুরের প্রথম ইউনিটের জন্য জ্বালানী উৎপাদনের কাজ শুরু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ঠরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে চলতি বছরের  অক্টোবরের আগেই সেপ্টেম্বরে পারমাণবিক জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে আনা শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে এ সূত্র জানিয়েছে।

রাশিয়াতে জ্বালানি উৎপাদন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি পরিদর্শন ও চুক্তি সম্পদনের জন্য গত ১লা মে থেকে প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।

 প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানী (ইউরেনিয়াম) আমদানি ও সংরক্ষণ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হবে। এ মর্যাদা পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করবে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদন শুরু করতে আর কোনো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জও থাকবে না।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানায়, স্পর্শকাতর এ জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য আইএইএর অনুমোদন ও লাইসেন্সের পাশাপাশি রাশান ফেডারেশনের রপ্তানি নীতির আলোকে তাদের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পারমাণবিক জ্বালানি রাশিয়া থেকে দেশে আনা ও প্রকল্পে নেওয়ার সময় কঠোর নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বিস্তারিত গাইড লাইনও রয়েছে। গাইড লাইন অনুসরণ করে জ্বালানি বিমান বন্দরে এসে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ঈশ্বরদীর রূপপুর প্রকল্পে নেওয়া হবে। নিরাপত্তার দায়িত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রাবাহিনীর যে যে বিভাগের সদস্যরা থাকবেন তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়ও রয়েছে। সে সব বিষয়েও প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, রাশিয়াতে পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদনের প্রস্তুতির কাজ দেখতে প্রকল্প পরিচালকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়ায় রয়েছেন। জ্বালানি দেশে আনার পর কীভাবে তা প্রকল্পে নেওয়া হবে এবং সে সময় কঠোর নিরাপত্তায় করণীয় বিষয়েও আমাদের প্রস্তুতি চলছে। জ¦লানী নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট আর্মি, পুলিশসহ যারা সম্পৃক্ত থাকবেন তারা কিভাবে নিরাপত্তা দান করবেন সে সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের প্রস্তুতির কাজও চলছে।

জানা গেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহ করবে রাশিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টিভিইএল। এরআগে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও টিভিইএল’র মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রতিষ্ঠানটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইফ টাইম জ্বালানি সরবরাহ করবে। প্রকল্পের জন্য এই বিশেষায়িত জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) রড রাশিয়াতে উৎপাদিত হবে।

প্রসঙ্গত: রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (রসাটম) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাস্তবায়ন করছে। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পের ৯০ ভাগ ঋণ সহায়তা হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া। দুটি ইউনিট বিশিষ্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৫ সালে উৎপাদনে যাওযার কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী প্রকল্পের কজে চলছে মহাকর্মযজ্ঞ।