/ ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ঈদের আগমূহুর্তে ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) অধিগ্রহণকৃত জমির ফসলের ক্ষতিপূরণের মানবকি সহায়তা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। রবিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে ক্ষতিগ্রস্থ ৫৪ জন কৃষকের হাতে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়।
স্বামীর মৃত্যু হওয়ায় ক্ষতিপূরণের চেক গ্রহন করেন হাজেরা খাতুন। তিনি বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর খুবই কষ্টে দিন যাচ্ছে। বিনা শর্তে ক্ষতিপূরণের ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা পেয়ে আমি খুশি।
প্রকল্পের জমির কলা ও কালাই চাষী আলতাব হোসেন পেয়েছেন ৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর নিরাশায় ভুগছিলাম। ঈদের আগে আজ চেক পেয়ে খুব খুশি লাগছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালে চরাঞ্চলের ৯৯০ একর খাস জমি রূপপুর প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহন করা হয়। মানবিক দিক বিবেচনা করে এসব খাস জমিতে চাষাবাদকারী কৃষকের ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে মোট ৭৭৫ জনের তালিকা প্রস্তুত হয়। পরমাণু শক্তি কমিশন ২০১৭ সালে ক্ষতিপূরণের জন্য ২৭ কোটি ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ টাকা বরাদ্দ করেন। তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্তির নিয়ে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়লে এবং নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান বন্ধ হয়ে যায়।
চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস। সহকারি কমিশনার (ভূমি) টি এম রাহসিন কবীর, পাকশী ইউপির চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বিশ্বাসসহ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও সাংবাদিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বিশ্বাস বলেন, অপপ্রচার শর্তেও আমার এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ক্ষতিপূরণের সম্পূর্ণ টাকা পেয়ে খুব খুশি।
ইউএনও পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, গত ১৯ মার্চ ৩৬৩৯ নম্বর রিট পিটিশনের রায়ে হাইকোর্ট টাকা পরিশোধের জন্য আদেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩ এপ্রিলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮৫ নম্বর স্মারকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের টাকা পরিশোধের জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ পাবনার জেলা প্রশাসক ৬ এপ্রিল ৮০৩ সম্বর স্মারকে প্রেরীত নির্দেশের প্রেক্ষিতে চেক বিতরণ করা হচ্ছে। পাবনা যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতের মোকাদ্দমার আদেশে ও হাইকোর্টের রীট পিটিশনের রায় অনুযায়ী চার ধাপে মোট ৫৫৯ জন কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেয়া হলো বলে জানান তিনি।