পাবনায় বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হাসানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হাসান জিন্দান (৭৩) কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টায় (২১ ফেব্রুয়ারি) নিজ বাসভবনে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মঙ্গলবর বিকাল ৪টায় পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালা মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হাসান জিন্দানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে পাবনা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ শওকত মেহেদি সেতু এর সাথে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এরপর একই স্থানে আছর নামাজের পর মরহুমের নামজে জানাযা শেষে স্থানীয় কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়। নামাযে জানাযায় মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বীরমুক্তি জাহিদ হাসান ১৯৫০ সালের ৮ অক্টোবর পাবনা শহরের দিলালপুর খান বাহাদুর লজ পিত্রালয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। ছাত্র জীবনে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ৬৮/৬৯ সালে গণআন্দল গণ অভুথ্যানে রাজপথের লড়াকু সৈনিক হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধি শুরু হলে ন্যাপ- কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে বিশেষ গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
এরপর দেশ স্বাধীন হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হাসান জিন্দান বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের পাবনা জেলা কমিটির সহ- সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগষ্ট পঠ পরিবর্তনের পর দেশে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর জেল খানায় ৪ জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হলে পাবনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হাসান জিন্দান ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ মাঠ থেকে ৫ নভেম্বর বিরাট বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। এদিন পুলিশের বাধা পেরিয়ে মিছিল পর্ব শেষে গায়বানা জানাজায় অংশ গ্রহন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হাসানের পিতা ছিলেন নুরুল হুদার ৭ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে জাহিদ হাসান ছিলেন ৫ নং সন্তান, বড় ভাই খালিদ হাসান নিনু যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে চুক্তিভিত্তিক রাজনৈতিক দল গড়ার সুযোগ দেন। এ সময় বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন গঠিত হলে তিনি বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের পাবনা জেলা কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের পাবনা জেলা কমিটির সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি পাবনা জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন।
তিনি টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালার প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১২ বছর শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি মৃত্যুকালীন পর্যন্ত টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপালন করেন। মৃতুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও আত্মীয় গুণ গ্রাহী রেখে গেছেন।