পাবনার মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট-সনদ বাতিলাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্বারকলিপি প্রদান

// পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে গেজেট-সনদ বাতিলাদেশ প্রত্যাহার, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষরিত সনদ ও লাল মুক্তিবার্তা পুন:বহালের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেছেন পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেনের নিকট স্বারকলিপি দেওয়া হয়। স্বারকলিপি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুলিপি পাঠানো হয়েছে, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক এবং পাবনা সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা বরাবর।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো স্বারকলিপিতে উল্লেখ আছে, আমরা পাবনা সদর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। জেলার বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম বাবলু চক্র পাবনা সদরের দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ষড়যমূলকভাবে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে জামুকায় বিভিন্ন অভিযোগ করেন। বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম বাবলু ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন সময়ে ১০/১৫ জনের ছোট ছোট গ্রুপে অভিযোগ দাখিল করে এখন পর্যন্ত পাবনা সদর উপজেলার গেজেটভুক্ত ৫১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বাতিল করেছে। ভূক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারা মহামান্য হাইকোর্টে রীট “পিটিশন দাখিল করেছেন। ইতোমধ্যে রীট পিটিশনের শুনানীর অন্তে বিজ্ঞ বিচারক জামুকার গেজেট ও সনদ বাতিল আদেশ স্থগিত করেছেন এবং জামুকার আদেশ কেন নীতি বহিঃভূত ঘোষণা করা হবে না এর কারণ জানতে চেয়ে রুল জারী করেছেন।
স্বারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সাইফুল আলম বাবলু পাবনায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন। ২০১৬ সালের পর থেকে বাবলু মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছেন। তার দাবিকৃত চাঁদা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় পাবনার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট ও সনদ বাতিলসহ নানাভাবে হয়রানি করছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে।
পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলির সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধাকালিন কমান্ডার ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বাবু বলেন, যেসব মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বন্ধ করা হয়েছে তাদের অধিকাংশ জনেরই লাল মুক্তিবার্তা, মুক্তিবার্তাসহ অন্যান্য গেজেট রয়েছে। বাতিলকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাও রয়েছেন।
এছাড়াও অনেকের নামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রত্যয়নপত্রও রয়েছে। তারা দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম বাবলু চক্র তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন। তার এই অপকর্ম পাবনায় প্রকাশ্য ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম বাবলু একজন অভিযোগকারী। তিনি পাবনা সদর সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাচাই কমিটিতে থাকেন কিভাবে? তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাচাই কমিটি থেকে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে বাবলুর নাম প্রত্যাহার করার দাবি জানান।