ইয়ানূর রহমান : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মাল্টিপারপাস ভবন অনুমোদনের ৩ বছর পার হলেও নির্মাণ করা হয়নি। অথচ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ নেই। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, ভবন নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ৪ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন হবে মর্মে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এইচইডি প্রধান কার্যালয়ের উপ প্রধান আনিসুর রহমান সাক্ষরিত
একটি অনুমোদন পত্র হাসপাতালে আসে। বাঁশ দিয়ে ঠেঁকিয়ে রাখা পরিত্যক্ত ভবনটি ভেঙে সেখানে মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ করার জন্য বলা হয়েছিলো। কথা ছিলো ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্মাণ কাজ শুরু করার। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিন বছরের বেশি সময় পার হলেও ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপত্র অনুযায়ী ভবনের নিচ তলায় রোগীর স্বজনদের বসার স্থানসহ থাকবে ক্যান্টিন, মনোহরী দোকান ও ওষুধ ফার্মেসী। প্রথম তলায় স্থাপন হবে বৃহৎ ড্রাগ স্টোর, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কনিষ্ট ও ইন্টার্ন
চিকিৎসকদের জন্য সিঙ্গেলরুম/ ডরমেটরি এবং চতুর্থ তলায় জেষ্ঠ্য চিকিৎসকদের জন্য স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করার পরিকল্পনা ছিলো।
সূত্র জানায়, মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ হলে অনেক ধরণের সুবিধা হতো।
কিন্তু ভবন নির্মাণের বিষয়ে কোনো কার্যকরী প্রদক্ষেপ নেই কর্মকর্তাদের। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের জোর দাবি অতি সত্ত্বর মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ করা হোক।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া শেষ করে কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। কেনো দেরি হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছেন না। দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে নিয়মিত যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। অচিরেই মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই সেখানকার দ্বিতল ভবনটির ছাদে এবং ওয়ালে ফাঁটল দেখা দেয়। এছাড়া গ্রিলের একাংশ নিচের দিকে বসে যায়। ওই দ্বিতল ভবনে মোট ৪টি ওয়ার্ড ছিলো। সেগুলো হলো পুরুষ সার্জারি, অর্থোপেডিক, গাইনী ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড। ২৮ জুলাই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিদর্শনে আসেন গণপূর্ত
বিভাগের কর্মকর্তারা। সেখানে কোন প্রকার দুর্ঘটনা এড়াতে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা হাসপাতালের ওই ভবনের ছাদ ঠেকাতে বাঁশের খুঁটি দেয়। গণপূর্ত বিভাগের প্রধান কার্যালয় থেকে ডিজাইন বিশেষজ্ঞ টিম এসে ওই ভবনটি
পরিদর্শনের পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেন। ফলে ৪টি ওয়ার্ডের রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। ওই ভবন ভেঙে সেখানেই মাল্টিপারপাস ভবন করার কথা ছিলো। কিন্তু পরিত্যক্ত ভবনটি সেই ভাবেই আছে।