পাবনা প্রতিনিধিঃ
খাল পাড়ের বিভিন্ন প্রজাতির কাছ কেটে সাবাড় করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনস্থ ক্যানাল দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও ব্যক্তিমালিকাধীন জায়গার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। এনিয়ে প্রতিবাদ করায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
দখলের ফলে হুমকির মুখে পড়তে পারে সেচ প্রকল্পের ক্যানাল। এমনিতেই খালটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে এভাবে ক্যানালটি দখল হলে ব্যহত হতে পারে ক্যানালটির পানি দিয়ে উৎপাদিত শত শত বিঘার জমির আবাদ।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের জোড়গাছা মধ্যপারায় বকুল হোসেনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত বকুল পাশের সরপ গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জোড়গাছা মৌজার ৫০৬ নং দাগের ১৬ শতাংশ জায়গার মধ্যে ৭ শতাংশ সেচ প্রকল্পের জন্য সরকার উপযুক্ত মূল্য দিয়ে অধিগ্রহণ করে। বাকি জমি মালিক জহুরুল ইসলামের কাছ থেকে ক্রয় করেন বকুল। ১৬ শতাংশের ৯ শতাংশ জমি অবশিষ্ট থাকলেও ১২ শতাংশ খারিজ দেখিয়ে সরকারি ক্যানাল দখলের চেষ্টা করেন বকুল। এসময় পাশের জমিতে অবশিষ্ট জমি দাবি করে সেখানেও দখলের চেষ্টা করেন। একাধিকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত রবিবার (২২ জানুয়ারি) কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে ক্যানালের পাড়ির গাছসহ ব্যক্তিমালিকাধীন জায়গার গাছ কেটে সাবাড় করেন। এসময় পাশের জমির মালিক প্রতিবাদ করায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
পাশের জমির মালিক আকবর আলী বলেন, ‘৫০ বছর ধরে এই জমি আমরা বৈধভাবে দখল করে বসবাস করছি। হঠাৎ করে বকুল পাশের জমি কিনে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করছে। বকুল দলিল হিসেবে তার জমি পূব দিকে, অথচ পশ্চিমের সরকারি ক্যানাল পার হয়ে আমার জমি দখলের চেষ্টা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার একমাত্র ছেলে বিদেশে থাকেন। আমি বাড়িতে পুত্রবধু ও বৃদ্ধা স্ত্রী নিয়ে একা থাকি। বকুল মাঝেমধ্যেই হুমকি দিয়ে যায়। গত রবিবার মাস্তান নিয়ে এসে আমার সমস্ত গাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। আমরা উপযুক্ত বিচার চাই।’
সরকারি ক্যানাল দখলের বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্ত বকুল বলেন, ‘এই জমির মালিক এখন আমি। সরকারি ক্যানাল দিয়েছে কিন্তু জমির আগের মালিক হিসেবে আমি খাবো। এজন্য গাছগুলো কেটে দিয়েছি। আমি সেখানে ঘর তুলে বসবাস করবো।’
এবিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বেড়া পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, ‘আমি জানতাম না। এবিষয়ে এখনই খোঁজখবর নিচ্ছি এবং প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাগ্রহণ করছি।’
এবিষয়ে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। এবিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’