সাঁথিয়ায় চুরি ঠেকাতে গোয়ালঘরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও গরুর সাথে রাত্রী যাপন !

সাঁথিয়া (পাবনার) প্রতিনিধি ঃ
পাবনার সাঁথিয়ায় ইদানিং বিভিন্ন বাসায়,থানার সামনে চুরি হওয়ায় জনমনে আতংক বেড়ে গেছে। আগামী কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে খামারীরা শুরু করেছে আগাম গরু পরিচর্যা। গরু মোটাতাজার সাথে গরু চোরের হাত থেকে রক্ষা করতে শুরু করেছে আধুনিক পরিকল্পনা। কৃষকদের পারিবারিক কষ্টে অর্জিত সম্পদ গরু চৃুরি ঠেকাতে গোয়ালঘরে সিসিক্যামেরা স্থাপন করছে অনেকে।
জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলায় প্রায় সর্বত্রেই কম বেশী গরুর খামার ও কৃষকরা গৃহে গরু পালন করছে আগামী কোরবানীর ঈদ কে সামনে রেখে । অতি যতেœ অনেক টাকা খরচ করছে লাভের আশায় দিনের পর দিন পরিচর্যা করা হয়া অবুঝ গবাদী পশূ। যার একটি গরুর দাম ৫০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আর সেই পরিশ্রমের সম্পদ চুরি ঠেকাতে অনেক বেগ পোহাতে হয় তাদের। ইদানিং উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, থানার সামনে ডাক্তারের বাসায়, সাংবাদিকের বাসাসহ সিরিজ চুরির ঘটনায় সর্বত্র চুরি আতংক বিরাজ করছে। গত ১ জানুয়ারি উপজেলার পৌর সভা সদরের গাগড়াখালি গ্রামের মোস্তাক হাসানের দুটি দুধেল গাভী চুরি হয়। গাভী দুটির মূল্য প্রায় ৪ লাখ বলে জাানান মোস্তাক। তার ওই দুই গাভী প্রতি দিন ২০/২২ লিটার দুধ দিতো। যা দিয়ে তার সংসার অতিবাহিত হতো। তাছাড়াও বিভিন্ন সময় উপজেলার শোলাবাড়িয়া গ্রামের ওমেদ মল্লিকের ৪টি, জলিল মল্লিকের ৪টি, মাজেদ আলীর ২টি, গোবিন্দপুর গ্রামের আজিজলের ছেলে রবিউলের ২টি, চরপাড়া গ্রামের রস্তমের ৩টি, হারুনের ৩টি, মহসিনের ৫টি, মনসুরের ২টিসহ ১০/১২ জনের গরু চুরি হয়। পার্শ্ববর্তি গাঙ্গুহাটি গ্রামের আবুল হোসেনের ৫টি গরু, মাধপুর করমজা পাড়ার রইজ উদ্দিনের ৬টি গরু, চুরি হয়।
উপজেলার গাঙ্গুহাটী গ্রামের করিমের খামারে ৫টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।গোবিন্দপুর গ্রামের পশু চিকিৎসক মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ২টিসহয় আর্থিক সংগতিল অনেকেই চোর আতংকে গোয়াল ঘরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে।পশু চিকিৎসক মুক্তার হোসেন বলেন, ২ লক্ষ টাকার একটি গরু প্রতিপালন করতে প্রতি গরুর পিছনে একলক্ষ পঞ্চাশ থেকে একলক্ষ সত্তর হাজার টাকা খরচ হয়। এত টাকা করচ করার পর যদি গরু চুরি যাতে না হয়, সে ভয়ে তিনি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করছেন।
এদিকে নিজ বাড়িতে গরুর নিরাপত্তা ভোগা কৃষকরা রাতে গোয়াল ঘরকে বসবাসের ঘর হিসাবে ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলা গোবিন্দপুর গ্রামের সোবাহান ফকিরের ছেলে লালু ফকির নিজের বসবাসের ঘর ত্যাগ করে এখন বাস করছেন গরুর সাথে গোয়াল ঘরে।
গাঙহাটি গ্রামের মোস্তফা মুন্সি ও তার স্ত্রী তাসলিমা খাতুন বলেন, আমরা গরীব মানুষ কষ্ট করে ২টি গরু পালন করছি, গরু চুরি হওয়ার ভয়ে আমরা কনকনে শীতের মধ্যেও ঘর ছেড়ে গোয়াল ঘরে গরুর সাথে রাত কাটাই। গোবিন্দপুর গ্রামের আলাল শীতের লেপ কাঁথা নিয়ে গোয়াল ঘরে রাত কাটাচ্ছেন।
এদিকে গত ১৪ জানুয়ারি রাতে সাঁথিয়া থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মিনি ট্রাকসহ আন্তঃজেলা গরু চোরের ৮সদস্যকে আটক করে।
সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, শীতকালে গরু চুরি হয় বেশী। সিসিক্যামেরা লাগিয়ে জনগন সচেতন হচ্ছে। তাদের সাথে আমরাও পাহারা জোরদার করছি। আগের মত আর গরু চুরি হবে না।