পাবনা প্রতিনিধিঃ
ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে জমি দখল এবং রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে পাবনার ঈশ্বরদীর স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এইসব অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে দাশুড়িয়া-পাকশী মহাসড়কের জয়নগর বোর্ড অফিস মোড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ‘খাইরুল ইসলাম বাড়ি করার কথা বলে প্রথমে কিছু জমি ক্রয় করেন। পরে এইসব জমি রেজিস্ট্রির আগেই দখল করে নিয়েছে। এখন সে হুমকি দিচ্ছে যে বাকি জমিও তাকে দিতে হবে। ইতোমধ্যেই সে অনেক জমি দখল করে গাছ কেটে ও মাটি ভরাট করেছে। এইসব নিয়ে প্রতিবাদ করলেই নানা হুমকি-ধমকি দেন। সে জোর গলায় বলেন যে- এমপি, ডিসি, এসপি, ওসি, মেয়র সব নাকি তার পক্ষে। কেউ তার কিছুই করতে পারবে না।’
তারা আরও অভিযোগ করেন, ‘রিসোর্টের নামে এখানে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়। অনেক তরুণ-তরুণীর আসা যাওয়া এখানে। মদের আড্ডা হয়। উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে ডিজে পার্টি হয়। রিসোর্টটি গণবসতির মাঝে হওয়ায় অনেকে পড়াশোনা ও ধর্মীয় কাজও করতে পারেন না।’
এদিন বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে শতশত মানুষ অংশগ্রহণ করে। ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হন ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা, যদিও রিসোর্টটি পৌরসভার বাহিরে সলিমপুর ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত। এসময় চেয়ারম্যান না থাকলেও মেয়রের সঙ্গে রিসোর্ট পক্ষে অনেকেই ছিল। সেখানেই ভুক্তভোগীরা তাকে ঘিরে ধরে তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। এসময় মেয়র তাদের আশ্বস্ত করেন।
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রথমে কথা বলতে চাননি মেয়র ইছাহক আলী মালিথা। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এখানে আমি আসছি তাদের সঙ্গে কথা বলতে। আমি উভয়ের সঙ্গে কথা বলে পরে আপনাদের (সাংবাদিক) বলতে পারবো। এর বেশি এই মুহুর্তে আপনাদের কিছু বলতে পারবো না।’
এব্যাপারে স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে সামাজিকভাবে হেয়পতিপন্ন করতে কিছু স্বার্থনেষী মহল এইসব অভিযোগ করছেন। অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। এখানে স্থানীয় এমপির বোনের সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। এমপি সাহেব বার বার অনুরোধ করেও তিনি তার কথা শোনেননি, পরে এমপি সাহেবের ছেলে-পেলেরা জায়গাটা ঘিরতে গিয়েছিলেন। আমি একটার জিনিস ১০টার দিয়ে কিনেছি, আমি কোনও লোককে আঘাত দেয়নি।
অসামাজিক কার্যকলাপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে যারা আসেন তারা অধিকাংশই রাশিয়ান। আমার এখানে কোনও মদ বিক্রি হয় না। রাশিয়ানরা বাহিরে থেকে কিনে এনে এখানে খান। এখানে আমার কিছু করার নাই। এবিষয়ে আমি রাশিয়ানদের কিছু বললে তারাই উল্টো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। কিন্তু বাহিরের কোনও নারী-পুরুষ এখানে অশ্লীল কিছু করেন না।’