র্যাব-৩ এর অভিযানে রাজধানীর মতিঝিল, শাহবাগ, সবুজবাগ, পল্টন, যাত্রাবাড়ী এবং বংশাল এলাকা হতে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ৩১ জন গ্রেফতার; ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র¿ উদ্ধার।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে জখমপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। এসব ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই কোন আইন শৃংখলা বাহিনীর দারস্থ হয় না। ফলে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রায় সকলেই মাদকাসক্ত। সাম্প্রতিককালে ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। ফলশ্রæতিতে র্যাব উক্ত ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৩ এর আভিযানিক দল রাজধানীর মতিঝিল, শাহবাগ, সবুজবাগ, পল্টন, যাত্রাবাড়ী এবং বংশাল থানাধীন এলাকায় ১৫/১২/২০২২ তারিখ রাতে অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য ১। মোঃ রুবেল (২৬), পিতা-আবু তাহের, সাং-কালাদিয়া খলিল ডাক্তার বাড়ী, থানা-সেনবাগ, জেলা-নোয়াখালী, ২। মোঃ সোহাগ (১৯), পিতা-মোঃ রনি, সাং-বীরগঞ্জ, থানা-বীরগঞ্জ, জেলা-দিনাজপুর, ৩। মোঃ মানিক (৩০), পিতা-মোঃ ফারুক, সাং-নবীগঞ্জ, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ, ৪। মোঃ সাইফুল ইসলাম (৩০), পিতা-মিন্টু মিয়া, সাং-টেঙ্গলপাড়া, থানা-পলাশ, জেলা-নরসিংদী, ৫। সুমন মিয়া (৩০), পিতা-মৃত সাহেদ আলী মিয়া, সাং-দক্ষিন কেরানীগঞ্জ, থানা-কেরানীগঞ্জ, জেলা-ঢাকা, ৬। মোঃ রাজু বিশ^াস (২৭), পিতা-মৃত রফিক বিশ^াস, সাং-চান্দুপাড়া, থানা-কলাপাড়া, জেলা-পটুয়াখালী, ৭। শ্রী দুলাল চন্দ্র শিল (৩২), পিতা-শ্রী পরিমল চন্দ্র সিল, সাং-ভান্ডারপুর, থানা-বদলগাছী, জেলা-নওগাঁ, ৮। মোঃ আসাদুল্লাহ (৪২), পিতা-মৃত মিয়া হোসেন, সাং-নঙ্কাকোলা, থানা-গৌরিপুর, জেলা-ময়মনসিংহ, ৯। মোঃ শাহাদাৎ হোসেন (২৫), পিতা-মোঃ আব্দুল সালাম, সাং-ভান্ডারী কান্দি, থানা-শিবচর, জেলা-মাদারীপুর, ১০। পান্না (২৫), পিতা-মোঃ রফিক, সাং-জিঞ্জজিরা হাওলীল, থানা-কেরানীগঞ্জ মডেল থানা, জেলা-ঢাকা, ১১। মেহেদি হাসান (২৫), পিতা-মোঃ দুলাল হাওলাদার, সাং-হারিনাকুলিয়া, থানা-কোতয়ালী, জেলা-বরিশাল, ১২। মোঃ শাকিল (২৭), পিতা-আব্দুল লতিফ, সাং-মোলাবাড়ী, থানা-কালকিনি, জেলা-মাদারীপুর, ১৩। মোঃ আসাদুল @বিটকেল (২২), পিতা-মোঃ আশরাফ, সাং-ফুলবাড়িয়া, থানা-সারিয়াকান্দি, জেলা-বগুড়া, ১৪। মোঃ রনি তালুকদার (১৯), পিতা-মোঃ বাদল মোল্ল্যা, সাং-বাসা নং-৮২/১/এ ত্রিমোহনী নন্দীপাড়া, থানা-খিলগাঁও, ঢাকা, ১৫। মোঃ হাফিজুল ইসলাম (১৯), পিতা-মৃত শেমর আলী, সাং-বওলা, থানা-ধনবাড়ি, জেলা-টাঙ্গাইল, ১৬। মোঃ রাসেল (২২), পিতা-মৃত রবিউল বাচ্চা, সাং-পূর্ব পাড়া, থানা-গফরগাঁও, জেলা-ময়মনসিংহ, ১৭। মোঃ হ্নদয় নিরব (২২), পিতা-মোঃ শাহজাহান, সাং-পশুরিবুনিয়া, থানা-রাঙ্গাবালি,জেলা-পটুয়াখালী, ১৮। মোঃ শেখ মিলন (২২), পিতা-মোঃ শেখ হবি, সাং-শিরাংগাল, থানা-নগরকান্দা ,জেলা-ফরিদপুর, ১৯। মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৯), পিতা-মোঃ অহিদ মিয়া, সাং-ছোনকান্দা, থানা-সোনারগাঁও, জেলা-নারায়নগঞ্জ, ২০। মোঃ জুয়েল হাওলাদার (২৬), পিতা-মৃত হাবিবুর রহমান, সাং-কামারকাটি, থানা-স্বরুপকাটি, জেলা-পিরোজপুর, ২১। মোঃ মুন্না(২২), পিতা- ওবায়দুল হক, সাং-গোড়লচৌপট্রি, থানা-কালীগঞ্জ, জেলা-লালমনিরহাট, ২২। মোঃ মাসুদ@ খোরশেদ আলম (২০), পিতা-নুরুল হক, সাং-সাহেবগ্রাম, থানা-নবাবগঞ্জ, জেলা-রাজশাহী, ২৩। মোঃ ফাহিম (২১), পিতা-মোঃ বাবু, সাং-১০/১, ৭১ দক্ষিণ সায়েদাবাদ, থানা-যাত্রাবাড়ী, ডিএমপি, ঢাকা, ২৪। আঃ কাদের (২৪), পিতা মৃত আব্দুল মোতালেব, সাং-দনিয়া, থানা-ভোলা, জেলা-ভোলা, ২৫। মোঃ আশরাফ আলী (৩৭), পিতা-মৃত ছালাম ঢালী, সাং-বাগবাড়ী বিগন্দি, থানা-শ্রীনগর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ২৬। মোঃ মিলন (২৫), পিতা-মোঃ মতিন মাতব্বর, সাং-পশ্চিম মুন্দিয়া, থানা-শ্রীনগর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ২৭। মোঃ রিয়াজ (৩৬), পিতা-মোঃ মহির উদ্দিন, সাং-কোনাইল, থানা-রাজবাড়ী সদর, জেলা-রাজবাড়ী, ২৮। গৌতম অধিকারী (৩৮), পিতা-গৌরাঙ্গ অধিকারী, সাং-কাঠপট্রি, থানা-বরগুনা সদর, জেলা-বরগুনা, ২৯। মোঃ জুয়েল হোসেন (২৮), পিতা-মৃত আলী আকবর @ আকবর, সাং-আঙ্গারপুরা, থানা-বরগুনা সদর, জেলা-বরগুনা, ৩০। মোঃ জাবেদ (৩৮), পিতা-মৃত ইউসুফ ভুঁইয়া, সাং-কুসুমপুর, থানা-সিরাজদিখান, জেলা-মুন্সিগঞ্জ এবং ৩১। মোঃ রবিউল ইসলাম (২০), পিতা- মোঃ সোহাগ, সাং-জামতৈল, থানা-নাসিরনগর, জেলা-বি-বাড়িয়াদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদের নিকট হতে ০৩ টি এন্টিকাটার, ১৪ টি বেøড, ০২ টি ছুরি, ০৪ টি সুইচ গিয়ার, ০১ টি ক্ষুর, ০১ টি কাঁচি, ০৬ টি ব্যাটারি, ৩৭ টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২৭০৭৩/-টাকা উদ্ধার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ, বিজিবিএম, পিবিজিএম, পিএসসি।
অধিনায়ক জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। তারপর সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এছাড়াও সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। এ সকল ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘেœ স্বস্তির সাথে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন এলক্ষ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।