ইকবাল কবীর রনজু, চাটমোহর পাবনা:
পাবনার চাটমোহর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গুমানী ও বড়াল নদীতে মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী “বাউত উৎসব” অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে পলো, খেয়া জাল, বাদাই জাল সহ নানারকম মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে বাউতরা সমবেত হন গুমানী নদী পাড়ের সেনগ্রাম এলাকায়। গুমানী নদীতে মাছ শিকারের পর দুপুরের দিকে তারা গুমানী ও বড়ালের সংযোগস্থল নূরনগরের ভাটিতে বড়াল নদীতেও মাছ শিকার করেন।
এ এলাকায় দীর্ঘ বছর ধরে চলে আসছে গ্রামীণ এ ঐতিহ্য। প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বাউতরা এক এক দিন এক এক বিল নদী জলাশয়ে দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার করেন। তবে দিন দিন বিল-জলাশয়ের আয়তন কমে আসায় এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত চায়না দুয়ারী জালের প্রভাবে এখন আর বেশি মাছ ধরা পরছে না। তবু বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সৌখিন মানুষ মাছ ধরতে এবং আনন্দ উপভোগ করতে যোগ দেন বাউত উৎসবে।
বৃহস্পতিবার নদী পাড়ে গেলে দেখা যায়, শীত উপেক্ষা করে মাছ ধরছেন মানুষ। কেউ পলো, কেউ ঠেলা জাল, কেউ বাদাই জাল সহযোগে মাছ ধরছেন। পাশর্^বর্তী আটঘরিয়া উপজেলার ভরতপুর গ্রামের ইউসুফ আলী জানান, প্রতিবছর আমরা এসময়টার অপেক্ষায় থাকি। মাছ পাওয়া না পাওয়া বড় কথা নয় এ উতসবে আমরা আনন্দ উপভোগ করি। ভাঙ্গুড়া উপজেলার দহপাড়া গ্রামের সজীব হোসেন ও মিজানুর রহমান জানান, শোল, বোয়াল, রুই, কাতল, গজার, টাকি সহ বিভিন্ন দেশী মাছ পাওয়া যায়। কেউ মাছ পান আবার কেউ পান না।
বাউতদের দলনেতা চাটমোহরের ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের হাফিজুল ইসলাম জানান, এক এক দিন এক এক এলাকার নদী বা বিলে মাছ ধরতে যাই আমরা। আগে থেকেই সিদ্ধান্ত হয় কবে কোথায় মাছ শিকারে যাওয়া হবে। বিভিন্ন এলাকার দল নেতারা মোবাইল ফোনে ও মুখে মুখে জানিয়ে দেন এ তথ্য। তিনি আরো জানান, একদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত চায়না দুয়ারী জালের প্রভাব অন্যদিকে স্বোতী জালের মালিকরা খাল বিল নদীতে বিষ প্রয়োগ করেন বিধায় আগের চেয়ে মাছ অনেক কমে গেছে। অনেক প্রজাতির মাছই এখন বিলুপ্ত।