৭ দফা দাবিতে চলমান আলন্দোলনের প্রতি পাবনার সকল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধারা একাত্বতা ঘোষণা করেছেন। শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত দিনভর পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পাবনার পশ্চিমঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বাবুর নেতৃত্বে ৯ সদস্য বিশিষ্ট বীরমুক্তিযোদ্ধাদের একটি টিম পাবনা জেলার সকল উপজেলা সফর করেন।
সফর টিমের বীরমুক্তিযোদ্ধারা প্রথমে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সুজানগর উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবদুল মজিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পর্যায়ক্রমে এ টিমের সদস্যরা সাঁথীয়া উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ, বেড়া উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা ইসহাক, ফরিদপুর উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম মোরশেদ, ভাঙ্গুড়া উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীবমুক্তিযোদ্ধা মোকছেদুর রহমান, আটঘরিয়া উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং মত বিনিময় করেন।
এরপর সফররত টিমের বীরমুক্তিযোদ্ধারা পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নূরুজ্জামান বিশ্বাসের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বলেন, সাইফুল আলম বাবলু বে-আইনী ও অনিয়মের মাধ্যমে যে সমস্ত কর্মকান্ড করে চলেছে এর প্রতিকার হওয়া প্রয়োজন।
এছাড়াও সফর টিমের কাছে সৌজন্য সাক্ষাৎ কালে সুজানগর উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবদুল মজিদ বলেন, সাইফুল আলম বাবলুর নামে গেজেট-সনদ আছে এ বিষয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই, তবে তিনি বলেন, সুজানগর এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমরা সাইফুল আলম বাবলুকে কোনো স্থানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে দেখিনি।
সাঁথিয়া উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ২য় তলায় সফর টিমের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, সাইফুল আলম বাবলু সাঁথিয়া এলাকার সন্তান। তার নামে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রাণালয় হতে গেজেট ও সনদ আছে, এ বিষয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। তবে তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সাইফুল আলম বাবলুকে সাঁথিয়া এলাকায় কোন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাকে অংশগ্রহণ করতে দেখিনি।
সফর টিমের নিকট সকল উপজেলা ইউনিট কমান্ডারগণ পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ৭ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে একাত্বতা ঘোষণা করেন। চাটমোহার উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাহারুল ইসলাম অসুস্থতা জনিত কারণে তাঁর সাথে সফর টিমের স্বাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি। তিনি মোবাইলফোনে পাবনায় ৭ দফা দাবিতে আন্দোলনরত বীরমুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি একাত্বতা ঘোষনা করেন। এ দিন সফর টিমের বীরমুক্তিযোদ্ধারা সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাইস গাড়ি নিয়ে পাবনা জেলার সকল উপজেলায় সফর করেন। সফরকালে বিকাল ৫টায় আটঘরিয়ার দেবোত্তর বাজারে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ২য় তলায় আটঘরিয়া উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর সকল বীরমুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পাবনার মালিগাছার রণাঙ্গণের ঐতিহাসিক সম্মুখ যুদ্ধে আটঘরিয়া থানার সাবেক এ,এস,আই শহীদ আবদুল জলিলের কবর জিয়ারত করেন।
পাবনা জেলার সকল উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডাররা সফররত টিমের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট বলেন, যাঁরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট ও সনদপ্রাপ্ত পেয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অর্ধ-শতাব্দি পর দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অশ্রুদ্ধা ও অসম্মান করা হচ্ছে। তাঁরা সফররত টিমের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের টিমের কাছে আরো বলেন, যাঁরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রলয় থেকে গেজেট-সনদ প্রাপ্ত হয়েছেন তাঁরা সকলেই মুক্তিযোদ্ধা। আমরা কখনো তাঁদের কাউকে অমুক্তিযোদ্ধা বলছি না। বীরমুক্তিযোদ্ধারা বলেন, নেপথ্যে থেকে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য এ সমস্ত বে-আইনী কর্মকান্ড করা হচ্ছে কীনা সেটি সরকারকে ভেবে দেখতে হবে। পাবনার সকল উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা জামুকার চেয়ারম্যান মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ,ক,ম মোজাম্মেল হক এর নিকট এ বিষয়ে সু-বিচার দাবি করেছেন। সেই সাথে পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এ বিষয়ে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনাসহ এ সমস্ত বে-আইনি ও অনিয়ম বর্হিভূত কর্মকান্ড বন্ধের জন্য জোড় দাবি জানিয়েছেন।
ছবির ক্যাপশনঃ ৭ দফা দাবিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ও একাত্বতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখছেন সাঁথিয়া উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ।