সঞ্জু রায়, বগুড়া: ‘চোরে না শোনে ধর্মের কথা’ প্রবাদ বাক্যটির মতোই বারবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জামিনে এসে আবারো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছিলো বগুড়ার আলোচিত সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামী হাড়ি জুয়েল (৪২)। অবশেষে জেলা পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২ টার দিকে শহরের শিববাটি কালিমন্দির এলাকা থেকে আবারো বিদেশি পিস্তল ও ইয়াবাসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও সদর থানা পুলিশের পরিচালিত ঐ যৌথ অভিযানে জুয়েল চন্দ্র ওরফে হাড়ি জুয়েলের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, পিস্তলের ম্যাগাজিন ও ৬৫ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার জুয়েল সদর উপজেলার সাবগ্রাম মালিপাড়া গ্রামের মনোরঞ্জন ওরফে কালিপদোর ছেলে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে, হাড়ি জুয়েল শিববাটি এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে অস্ত্র ও মাদকসহ অবস্থান করছে। পুলিশের তালিকাভুক্ত এই সন্ত্রাসীর এমন খবরে ডিবি ও সদর থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, হাড়ি জুয়েল পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সে বারবার জামিনে এসে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আবারো অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িয়ে যায়। সে জামিনে আসলেও তার উপর সর্বদা গোয়েন্দা নজরদারি থাকে সেই জায়গা থেকেই বৃহস্পতিবার তাকে আবারো অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, পূর্ব বগুড়ার কন্ট্র্যাক্ট কিলার হিসেবে পরিচিত হাড়ি জুয়েল বগুড়ার বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়া ব্যবহার করে এহেন কোন অপরাধমূলক কাজ নেই যার সাথে সে যুক্ত নেই। এর আগে একাধিকবার তাকে দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বিত উদ্যোগ নিলেও কপালজোড়ে এখনো বগুড়ায় হাড়ি জুয়েলের নাম রয়ে গেছে বলে জানান বগুড়ার অনেকেই।
এ প্রসঙ্গে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল ও মিডিয়া মুখপাত্র) শরাফত ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার জুয়েল একজন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাকে আবারো গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ৩ টার দিকে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে পরবর্তীতে রিমান্ডে নেওয়ার মাধ্যমে তাকে আরো অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী এই অভিযান কঠোরভাবে অব্যাহত থাকবে।