সঞ্জু রায়, বগুড়া: দীপের আলোর উজ্জ্বলতা ও ক্যাম্পাসের রাস্তায় রঙিন আলপনার সৌন্দর্য্যে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মিলনমেলায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে সাথে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) উদযাপিত হয়ে গেলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব শ্যামা পূজা বা দীপাবলি উৎসব।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বগুড়ায় একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে বগুড়া শজিমেকে সোমবার দীপাবলি উৎসবকে ঘিরে সার্বিক আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো। শ্যামা পূজার সারাদিন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মিলে পুরো ক্যাম্পাসে রুপ দিয়েছিল এক উৎসবের যেখানে রঙিন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছিল মেডিকেলের ভবন এবং পূজার মন্ডপ। শুধু তাই নয় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিন্তায় ক্যাম্পাসের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা সকলে মিলে এঁকেছিল রঙ্গিন আলপনা যা নজর কেড়েছে সকল ধর্মের মানুষের। এছাড়াও সকল অশুভ শক্তিকে বিদায় জানাতে ক্যাম্পাসে সন্ধ্যার পর প্রজ্জ্বলন করা হয়েছিল প্রদীপ যার আলোতে অন্যরকম সৌন্দর্য্য ফুঁটে উঠেছিল ক্যাম্পাস চত্ত¡রে।
দীপাবলি উৎসব আয়োজন প্রসঙ্গে বগুড়া শজিমেকের সহকারী অধ্যাপক (চক্ষু) ডা: পল্লব কুমার সেন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, সামাজিক সম্প্রীতির দেশ এই বাংলাদেশ। প্রতিটি উৎসব এইদেশে বাঙালির প্রাণের উৎসব হিসেবে উদযাপিত হয়। দীপাবলি উৎসব সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম একটি উৎসব। শজিমেকে বর্তমানে অধ্যয়নরত প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন সনাতন ধর্মানুসারী শিক্ষার্থী যারা পরিবার থেকে দূরে থেকে বগুড়ায় পড়াশোনা করছে। আবার শজিমেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী অনেক শিক্ষকও রয়েছেন। উৎসবের আনন্দ থেকে যেন কেউ বঞ্চিত না হয় এবং একই সাথে শ্যামার পূজার মাধ্যমে যে ধর্মীয় মূল্যবোধ সকলের মাঝে জাগ্রত হয় সেটি বজায় রাখতেই শজিমেকে এইবছর উৎসবমুখর পরিবেশে দীপাবলির আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। যদিও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আয়োজন কিছুটা সীমিত ছিল তারপরেও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মিলনমেলায় একটি সকলের কাছেই বেশ উপভোগ্য ছিল। দীপের আলোর উজ্জ্বলতায় সকলের জীবন যেন আলোকিত হয় এবং নিজেদের মাঝে থাকা সকল অশুভ সত্ত¡ার যেন বিনাশ হয় এই কামনায় তিনি সকলের মঙ্গল কামনা করেন।
জানা যায়, প্রতিবছর বেশ জমকালো আয়োজনে বগুড়া শজিমেকে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত হলেও এইবছর এমন উৎসবমুখর পরিবেশে দীপাবলি উৎসবের আয়োজনের নেপথ্যে ছিলেন শ্যামা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডা: নরেশ কুমার রায়, সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ বিশ^াস, সহ-সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে দীপা রায় সরকার ও সাহা সঞ্চিতা লোপা, অর্থ সম্পাদক বিপ্র সাহাসহ শজিমেক এর ৩১তম ব্যাচের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সৃজনশীল পরিকল্পনা যার প্রশংসা করেছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।
সার্বিক আয়োজন প্রসঙ্গে বগুড়া শজিমেক এর অধ্যক্ষ ডা: রেজাউল আলম জুয়েল জানান, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ হিসেবে সারাবিশে^ পরিচিত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের একটি ঐতিহ্য। ভবিষ্যতেও সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্প্রীতির এই মনোভাব যেন অটুট থাকে সেই লক্ষ্যেই বগুড়া শজিমেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম এই উৎসব উদযাপিত হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরাও অনেক খুশি। তিনি বলেন, সার্বিক আয়োজন নিয়ে শিক্ষার্থীরা তার কাছে অনুমতি চাইলে তিনি নির্ধিদ্বায় তা প্রদান করেছেন এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠুভাবে দীপাবলি উৎসবের সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছেন এতে অধ্যক্ষ হিসেবে তিনিও সন্তুষ্ট।