ইকবাল কবীর রনজু, চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার চাটমোহরে খোলা বাজারের (ও.এম.এস) চাল কিনতে ক্রেতার লাইন দীর্ঘ হচ্ছে ক্রমশই। চাহিদা বাড়লেও বরাদ্দ অর্ধেকে নেমে আসায় কেউ চাল কিনতে পারছেন কেউ পারছেন না। যারা চাল পাচ্ছেন তারা হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন। যারা দীর্ঘসময় লাইনে দাড়িয়ে থাকার পরও ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে চাল কিনতে পারছেন না তারা মনো বেদনা নিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন। এ চিত্র লক্ষ্য করা গেছে চাটমোহর পৌর সদরের বিক্রয় কেন্দ্র গুলোতে। ব্যানারে আটার কথা লেখা থাকলেও আটার বরাদ্দ না থাকায় তা বিক্রি হচ্ছে না শুরু থেকেই। সপ্তাহে ৫ দিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ চাল বিক্রি করার কথা থাকলেও ডিলাররা বিক্রয় কেন্দ্র খুলতে না খুলতেই অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে চাল। তাই ৩০ টাকা কেজি দরে চাল পেতে ক্রেতারা হুড়োহুড়ি, বাক বিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে চাটমোহর পৌর সদরে চারটি বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে মাথাপিচু ৫ কেজি করে ও.এম.এস এর চাল বিক্রি শুরু হয়। চারজন ডিলার ২ টন করে চাল বরাদ্দ পান। ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ২ টন করে চাল বিক্রি হলেও বরাদ্দ কমায় ১৭ অক্টোবর থেকে ১ টন করে চাল বিক্রি করছেন ডিলাররা। ফলে আগের চেয়ে অর্ধেক ক্রেতা চাল কিনতে পারছেন এখন।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) ১১ টার দিকে চাটমোহর পুরাতন বাজার ও নাড়িকেল পাড়া বিক্রয় কেন্দ্র ঘুড়ে দেখা যায় চাল না পেয়ে অনেক মানুষ খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকেও অনেকে চাল নিতে এসেছিলেন। মুলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার সালেহা, মাজেদা ও জিলহজ জানান, যাওয়া আসা ৩০ টাকা খরচ হলেও চাল না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন তারা। মথুরাপুর ইউনিয়নের খরবাড়িয়া গ্রামের জন কোড়াইয়া ও বুলবুলীসহ অন্তত ৪০ জন জানান চাল না পেয়ে তারাও খালি হাতে ফিরেছেন। পৌরসদরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এরকম সাত-আটশ মানুষ এখন খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।
চাটমোহর পুরাতন বাজার বিক্রয় কেন্দ্রের ডিলার তরুন চন্দ্র পাল ও নারিকেল পাড়া বিক্রয় কেন্দ্রের ডিলার খন্দকার সামসুল আল আমিন জানান, খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ও.এম.এস কার্যক্রমের বরাদ্দ অর্ধেক কমে যাওয়ায় অনেকেই চাল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আমাদের খারাপ লাগলেও করার কিছুই থাকছে না। বরাদ্দ বাড়ালে গরিব মানুষ উপকৃত হবে।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জামাল উদ্দিন জানান, ও.এম.এস এর চালের প্রচুর চাহিদা। বরাদ্দ কমে যাওয়ায় কম সংখ্যক মানুষ চাল পাচ্ছেন। বরাদ্দ বাড়লে বেশি মানুষ চাল পাবেন।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বরাদ্দ কমায় এ সমস্যা হচ্ছে। আমরা যতটুকু বরাদ্দ পাচ্ছি ততটুকু বিক্রি করতে পারছি। যারা আগে আসবে তারা আগে পাবে। খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলে মনিটরিং বাড়ানো হবে।