মৌলভীবাজারে ৫ ডাকাতসহ আটক-৭ : অস্ত্র, গুলি, লুণ্ঠিত টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার

মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার :মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন শেরপুর ঈদগাহ রোড আবাসিক এলাকায় জনৈক এমদাদ মোহাম্মদ সিরাজের বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনায় তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ৫ ডাকাতসহ ৭জনকে আটক করেছে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ। ২৯ এপ্রিল- দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ এ তথ্য জানান।আটককৃতরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার ময়না মিয়া এর পুত্র মোঃ রায়হান মিয়া (২৫), বিশ্বনাথ থানার নওধার পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়া এর পুত্র আক্কুল মিয়া ওরফে আকুল (৩৪),হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার পারকুল গ্রামের সঞ্জব উল্লাহ পুত্র মোঃ আফাজ মিয়া (৪৯), জগন্নাথপুর থানার কামড়াখাইর গ্রামের মৃত সুজাত মিয়া এর পুত্র মোঃ মনর মিয়া (৫৫), অশোক কুমার দে (৪০), ওসমানীনগর থানার মোবারকপুর গ্রামের মৃত নূর মিয়া পুত্র তোফায়েল আহমদ তোফা (৩৬) ও দিনেশ কর্মকার (৬৫)।জানা গেছে- জনৈক এমদাদ মোহাম্মদ সিরাজের বাড়ীতেকতিপয় দুস্কৃতিকারী গত ৪ ফেব্রুয়ারী রাত অনুমান আডাই ঘটিকার দিকে গেইটের তালা কেটে ভিতরে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখাইয়া সর্বমোট ২৩ ভরি স্বর্ণালংকার যার মূল্য অনুমান, তেইশ লক্ষ টাকা, এবং নগদ ছয় লক্ষ নয় হাজার টাকা ডাকাত দল লুন্ঠন করে নিয়া যায়।

এ ঘটনায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় (মামলা নং-০৮, তাং-০৬/০২/২০২৫ ইং) মামলা রুজু হওয়ার পর মাননীয় পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ, জাহাঙ্গীর হোসেন (পিপিএম-সেবা), মৌলভীবাজার-এর নির্দেশনায় সদর মডেল থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম, পাশ^বর্তী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানা এলাকা এবং সিলেট জেলার ওসমানীনগর এবং এসএমপি সিলেট এর দক্ষিন সুরমা থানা এলাকায় তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার কামরাখাইর এলাকার ময়না মিয়া এর পুত্র মোঃ রায়হান মিয়া (২৫)-কে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে, বিশ্বনাথ থানাধীন নওধার পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়া-এর পুত্র আক্কুল মিয়া ওরফে আকুল (৩৪),হবিগঞ্জ জেলার – নবীগঞ্জ উপজেলার পারকুল গ্রামের সঞ্জব উল্লাহ এর পুত্র মোঃ আফাজ মিয়া (৪৯),দেরকে গ্রেফতার করা হয়। এবং তাদের দেওয়া তথ্যমতে, রায়হান মিয়ার বসতঘর হতে ৬ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে জগন্নাথপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ধৃত আসামীদেরকে উল্লেখিত মামলায় বিজ্ঞ আদালতের আদেশমতে ২ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নিয়া গত ২৮ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের সহযোগী জগন্নাথপুর থানার কামড়াখাইর গ্রামের মৃত সুজাত মিয়া এর পুত্র মোঃ মনর মিয়া (৫৫), এর বসতবাড়ীতে অভিযান করে আসামীদের দেখানো মতে মনর মিয়ার বসতঘরের গ্যারেজ হতে দুই টি দেশীয় তৈরি পাইপগান, হাইড্রোলিক কাটার, তলা কাটার সাবল, মুখোশ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয় এবং উক্ত অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্তে জগন্নাথপুর থানায় অস্ত্র আইন মামলা দায়ের করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের দেওয়া তথ্যমতে, সিলেট কোতোয়ালী থানাধীন সোবহানীঘাট এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত অশোক কুমার দে (৪০)-কে গ্রেফতার করা হয়।

তার দেওয়া তথ্যমতে আন্ত : জেলা ডাকাত দলের প্রধান সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানার মোবারকপুর গ্রামের মৃত নূর মিয়া এর পুত্র তোফায়েল আহমদ তোফা (৩৬)-কে শ্রীমঙ্গল থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্বর্ণালংকার ক্রেতা সিলেট শহরস্থ লালদিঘীরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মার্কেট এর জনৈক স্বপন কর্মকারের জুয়েলার্সে অভিযান করে লুন্ঠিত স্বর্ণের ক্রেতা দিনেশ কর্মকার (৬৫) কে গ্রেফতার হয় এবং তাহার হেফাজত হতে বাদীর লুন্ঠিত ৪ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালংকার এবং স্বর্ণবিক্রির নগদ আট লক্ষ ছয় হাজার নয়শত বিরাশি টাকা উদ্ধার করা হয় । তথ্যমতে তাদের সহযোগী আসামীদের ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, উল্লেখিত ডাকাতির ঘটনা ছাড়াও তারা পরস্পর যোগসাজসে গত ২১ এপ্রিল মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন ১নং খলিলপুর ইউপির বাগারাই গ্রামে প্রবাসী আব্দুর রহিম এর বসতঘরের কেচি গেইটের তালা কেটে প্রবেশ করে পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্নালংকার এবং নগদ ২,৩৯,৫০০/-টাকা লুন্ঠন করার ঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকার করে। এই সংক্রান্তে পূর্বেই মৌলভীবাজার থানায় ডাকাতি মামলা রুজু হয়। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং করেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, পিপিএম। উপস্থিত ছিলেন- সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আজমল হোসেন, মৌলভীবাজার সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ উদ্দিন প্রমুখ