উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে ধর্মপাশা সুনুই জলমহালে মাছ ধরার অভিযোগ পাওয়া গেছে

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের মনাই নদী প্রকাশিত সুনুই নামক জলমহালটি নিয়ে উচ্চ আদালতে দুই পক্ষের পাল্টা-পাল্টি মামলা চলমান থাকা অবস্থায় একটি পক্ষ বিরোধ পূর্ণ ওই জলমহালটিতে অবৈধভাবে জোর পূর্বক প্রতিদদিন লাখ লাখ টাকার মাছ ধরছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ওই জলমহালের বৈধ ইজারাদার  সুনুই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুবল চন্দ্র বর্মণ বাদি হয়ে বুধবার বিকেলে প্রতিপক্ষের চন্দন বর্মণের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত আবেদন দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুনুই জলমহাল নিয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে প্রাধান বিচারপতি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে লিভ টু আপিল নম্বর  ১০৮ /২০২১ ও রিট পিটিশন নম্বর ১২৮০৯/১৬ ডিভিশনে মামলা চলমান থাকা সত্বেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে, প্রতিপক্ষের চন্দন বর্মনের নেতৃত্বে তার লোকজন প্রকাশে প্রতিদিন ওই জলমহাল থেকে লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে  ওই জলমহালের বৈধ ইজারাদার সুবল চন্দ্র বর্মণ হাইকোর্টের নির্দেশে চলতি ১৪২৭ বাংলা সনের জলমহালটির ইজারা মূল্য বাবদ ৩১ লাখ ৭৯ হাজার টাকা পরিশোধ করা সত্তেও তিনিতার সমিতির লোকজন  উক্ত জলমাহালে মাছ ধরতে না পেরে মারাত্মক ক্ষতির  সম্মূখিন হচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
ওই জলমহালের বৈধ ইজারাদার সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতির সুবল চন্দ্র বর্মণ বলেন,  ভূমি মন্ত্রণালয় উন্নয়ন প্রকল্পের ১৪২২ বাংলা সন হতে চলতি ১৪২৭ বাংলা সন পর্যন্ত সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে পক্ষে তিনি উজার প্রাপ্ত হন এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশে তিনি উক্ত জলমহালের  চলতি বছরের টাকা মূল্যে  ইজার মূল্য বাবদ ৩১ লাখ ৭৯ হাজার টাকা পরিশোধ করে তিনি উক্ত জলমাহালটির দখল বুঝে নেন।
কিন্তু সে সহ তার লোকজন নিয়ে  জলমহালে যাওয়ার পর থেকেই প্রতিপক্ষের প্রভাবশালী চন্দন বর্মনের নেতৃত্বে তার লোকজন আমাদের উপর হামলাসহ নানা  ভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।এক পর্যায়ে আমরা  তাদের অত্যাচারে ঠিকতে না পেরে ওই জলমহাল ত্যাগ করতে বাধ্য হই। এরপর থেকেই চন্দন বর্মন উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে জোর পূর্বক প্রকাকাশে  প্রতিদদিন লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমিসহ আমার সমিতির লোকজন আমাদের ওই বৈধ জলমাহালটিতে মাছ ধরতে না পেরে   আমাদেরকে এখন   স্ত্রী সন্তান নিয়ে  মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
এ ছাড়াও   এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক সহ স্থানীয়  উপজেলা প্রশাসনকে বারবার অবগত করেও এসব অন্যায়ের কোন প্রতিকার পাইনি ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চন্দন বর্মনের ০১৭৪৪-৩৪৬৪৯২ মোবাইল নম্ববারে আকাধিক বার কল করা হলেও মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায় নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মুনতাসির হাসান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মূলত  ওই জলমহালটি নিয়ে চলমান মামলায় উচ্চ আদালতে চন্দন বর্মণের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে সুবল চন্দ্র বর্মণের পক্ষে আপিল করা হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে ০১৭১৩-৩০১১৭৮ নম্বরে ফোনে একধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোনটি ধরেননি।